ট্রাম্পকে নোবেল মনোনয়ন দেওয়া পাকিস্তান এখন মার্কিন হামলাকে বলছে ‘বর্বরতা’

2 months ago 10

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ‘শাঁখের করাতের’ মুখোমুখি ইরানের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। একদিকে ইরানকে সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছে দেশটি, অন্যদিকে ইসরায়েলমিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও সম্পর্ক ঠিক রাখতে মরিয়া তারা।

চলমান সংঘাতে ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি ইরানের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান। একই আবহের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে পাকিস্তান।

ট্রাম্পের ভূয়সী প্রশংসার মাত্র একদিন পরই ট্রাম্পের নেতৃত্বে ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘বর্বরতা’ বলে আখ্যা দিয়েছে পাকিস্তান।

এমন দ্বিমুখী আচরণের জন্য বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড়ের কবলে ইসলামাবাদ। নিজ দেশের রাজনীতিক ও সাধারণ জনগণের তোপের মুখেও পড়তে হয়েছে পাকিস্তান সরকারকে।

প্রশ্ন একটাই - প্রতিবেশী দেশ ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন হামলার সমর্থন না করে কীভাবে তারা হোয়াইট হাউজের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে পারে; আবার প্রতিবেশী দেশেরও পাশে থাকতে পারে?

গত শনিবার ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘সত্যিকারের শান্তির দূত’ বলে প্রশংসা করে তাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেয় পাকিস্তান সরকার। 

পাকিস্তান বলেছে, ‘আঞ্চলিক উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠার মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির সঙ্গে সক্রিয় কূটনৈতিক যোগাযোগ বজায় রেখে কৌশলগত দারুণ দূরদর্শিতা ও অগ্রণী রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকার পরিচয় দিয়েছেন’।

ট্রাম্পের ভূয়সী প্রশংসার মাত্র একদিন পরই ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের পক্ষে সক্রিয়ভাবে যোগ দেয়। এ হামলাকে পাকিস্তান ‘বর্বরতা’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

ট্রাম্পের ‘অসাধারণ রাষ্ট্রনায়কত্বের’ প্রশংসা করার পর এখন পাকিস্তান সেই হামলার কঠোর নিন্দা করছে এবং বলছে এটা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

এই হঠাৎ পরিবর্তন অনেকে নজরে এনেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তানি রাজনীতিক ও সাধারণ মানুষ  ‘বিব্রতকর’ এবং ‘লজ্জাজনক’ শব্দ ব্যবহার করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত মালিহা লোধি বলেছেন, ‘তেল মারা কখনও নীতিমালা হতে পারে না।’

সেনেটের প্রতিরক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মোশাহিদ হুসাইন প্রথমে নোবেল মনোনয়নকে সমর্থন করেছিলেন এবং বলেছিলেন, ‘ট্রাম্পের অহংকারে ঘি ঢাললেও সমস্যা নেই, কারণ ইউরোপিয়রাও তাই করেছে।’

কিন্তু একদিন পর তিনিই বলেছেন, তিনি সরকারের নিন্দা সমর্থন করেন এবং পাকিস্তানকে উচিত সেই মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা, প্রত্যাহার ও বাতিল করা। তিনি ট্রাম্পকে ‘যুদ্ধবাজ’ বলে আখ্যা দেন।

এই ভারসাম্য রক্ষা এখন ভয়াবহ কঠিন হয়ে পড়েছে।

তথ্যসূত্র : বিবিসি বাংলা

Read Entire Article