ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ

11 hours ago 5

ক্যাম্পাসজুড়ে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। দীর্ঘদিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরাজ করছেন ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। ক্যাম্পাসের টিএসসি এলাকা, বিভিন্ন হল, গ্রন্থাগার চত্বর থেকে শুরু করে বিভাগগুলোর সামনে প্রার্থীদের প্রচারণাও প্রাণবন্ত।

দীর্ঘ ২৮ বছর পর ২০১৯ সালের ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচন হয়। এটি ছিল ১৯৯০-এর পর প্রথম ডাকসু নির্বাচন। নির্বাচনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নুরুল হক নুর সভাপতি (ভিপি) হন। এরপর পাঁচ বছর পর আগামী ৯ সেপ্টেম্বর হতে যাচ্ছে ডাকসু নির্বাচন।

গত ২৬ আগস্ট থেকে ক্যাম্পাসে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থিরা। নানা ধরনের কর্মসূচি চালাচ্ছেন তারা। মতবিনিময় সভা করছেন, লিফলেট বিতরণ, পোস্টার লাগানো, শোভাযাত্রা, এমনকি আড্ডার ফাঁকেও নিজের ভিশন তুলে ধরছেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে। প্রার্থীরা নিমমিত হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের কাছে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রত্যাশাও জানাচ্ছেন সেসব প্রার্থীদের কাছে। কেউ কেউ নোট করে রাখছেন, প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন কেউ কেউ।

বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপগুলোতেও চলছে ডাকসু নির্বাচনের গল্প। প্রার্থীদের তৈরিকৃত ভিডিও এবং প্রচারণা চলছেগ্রুপগুলোতে। আবার প্রার্থীদের নিয়েও ভোটাররা করছেন আলোচনা-সমালোচনা।

ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ

শিক্ষার্থীরা বলছেন, এত বছর পর ডাকসু নির্বাচন হওয়ায় বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে। অনেকেই ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নিজেদের প্রতিনিধি বেছে নেওয়ার সুযোগকে গণতান্ত্রিক চর্চার অংশ হিসেবে দেখছেন।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান বলেন, ডাকসু নির্বাচন আমাদের জন্য অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এখানে আমরা প্রথমবার সরাসরি ভোট দিয়ে নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছি। আমি মনে করি, নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত ছাত্র-অধিকার আদায়ের একটি দরজা খুলবে।

টেলিভিশন ও ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিমা আক্তার বলেন, সারা ক্যাম্পাস এখন নির্বাচনী উচ্ছ্বাসে ভরপুর। প্রতিদিন নতুন নতুন পোস্টার, নতুন স্লোগান আর শিক্ষার্থীদের ভিড় দেখলে মনে হয় যেন কোনো উৎসব চলছে। তবে আমাদের প্রত্যাশা, নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। আমরা চাই নির্বাচিত নেতারা শিক্ষার্থীদের বাস্তব সমস্যাগুলো সমাধানে এগিয়ে আসুক।

ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ

এ ছাড়া বিভিন্ন হলে শিক্ষার্থীরা রাতভর আড্ডায় প্রার্থীদের যোগ্যতা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করছেন। গ্রন্থাগার চত্বর ও টিএসসি এখন নির্বাচনী বিতর্ক আর ছাত্ররাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রাণবন্ত আলোচনার কেন্দ্রস্থল।

ডাকসু নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. মো. জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটবে এবং শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের প্রতিনিধিত্ব শূন্যতার অবসান হবে। অনেকের মতে, এই নির্বাচন নতুন নেতৃত্ব গঠনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসেও একটি নতুন অধ্যায় রচনা করবে।

এফএআর/এসএনআর/এএসএম

Read Entire Article