ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দেওয়ার নির্দেশ

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীন ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটভুক্ত পদে নিয়োগ দেওয়া সংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিষয়টি আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রিটকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার সাদাত আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তি করার জন্য বলেছেন আদালত।

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উপসহকারী প্রকৌশলী এবং দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দিয়ে ১২ নভেম্বর প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করার জন্য গত ১৪ জানুয়ারি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন আফজালুর রহমান।

জনৈক আফজালুর রহমান নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফ এর সমন আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আনোয়ার সাদাত।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীন ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটভুক্ত পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রিট আবেদনে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ১৯৭৮ এবং ১৯৯৪ সালের প্রকাশিত সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সব ধরনের চাকরিতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ১০ম গ্রেড বা দ্বিতীয় শ্রেণীর পদ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গত ১২ নভেম্বর বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের সহকারী জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগ দানের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এমনকি সরকারের প্রজ্ঞাপনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড তাদের ইচ্ছা মাফিক গ্রেডিং পদ্ধতিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যা রাষ্ট্রের আইন ও বিধির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন বলে মনে করি।

শুধু তাই নয়, বৈষম্যমূলক এই বিধি সংস্কারের জন্য গত ১৪ জানুয়ারি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন আফজালুর রহমান। আবেদনে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উপসহকারী প্রকৌশলী এবং দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা প্রদান পূর্বক ১২ নভেম্বর প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করার জন্যও আবেদন করেন।

এ বিষয়ে রিটকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার সাদাত জাগো নিউজকে বলেন, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের ১৯৯৪ সালের বাংলাদেশের চাকরি নিয়োগ বিধিতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উপসহকারী প্রকৌশলী এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদা প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে। বাংলাদেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠান এই বিধি মান্য করলেও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড সরকারের এই প্রজ্ঞাপন তামিল না করে নিজেদের ইচ্ছামতো নিয়োগ বিধি প্রবর্তন করে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এমনকি পল্লী বিদ্যুতের বোর্ড তাদের অধীনস্থ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে বিমাতাসুলভ বৈষম্যমূলক আচরণ করছে।

আমরা বিষয়টি আদালতে উত্থাপন করলে হাইকোর্ট বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের ১৯৯৪ সনের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী এবং দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদায় নিয়োগ সংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আইনজীবী আনোয়ার সাদাত বলেন, এই আদেশের ফলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মরত প্রায় ১ হাজার ৭০০ ডিপ্লোমা প্রকৌশলীকে দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা প্রাপ্তির পথ সুগম হতে পারে, যা ভবিষ্যতে নিয়োগ প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। এতে করে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সমূহের মধ্যে চলমান দীর্ঘদিনের বৈষম্য ও বিরোধ প্রশমিত হবে বলে আশা আইনজীবীর।

এফএইচ/এমআইএইচএস/এএসএম