ডিলার নিয়োগে নাম বাদ, খাদ্য কর্মকর্তাকে শাসালেন যুবদল নেতা

16 hours ago 10

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগের তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়ে জনসম্মুখে ওই কর্মকর্তাকে শাসানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতা ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে।

সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটেছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দেবীগঞ্জ উপজেলায় খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগের জন্য গত ২ ফেব্রুয়ারি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও খাদ্যবান্ধব কমিটির সদস্য সচিব স্বাক্ষরিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হয়। আবেদনকারীদের আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে যোগ্য প্রার্থীদের নাম সোমবার (১০ মার্চ) প্রকাশ করা হয়। একই দিনে ডিলার নিয়োগের জন্য উপজেলা পরিষদ হল রুমে লটারির আয়োজন করা হয়।

কার্যালয় সূত্রে আরও জানা যায়, শালডাঙ্গা ইউনিয়নের গড়দিঘী কেন্দ্রের জন্য মোট নয়জন আবেদন করেন। এরমধ্যে ৪ জন শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের আবেদন বাতিল করা হয়। এর মধ্যে একজন ওমর ফারুক। তার আবেদনটি বাতিলের কারণ হিসেবে গুদামের ধারণক্ষমতা কম রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী গুদাম ১৫ টন ধারণক্ষমতা হওয়ার কথা থাকলেও ওমর ফারুকের গুদাম ৫ টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন।

এদিকে তালিকায় নিজের নাম না থাকায় ওমর ফারুক উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে জনসম্মুখে কর্মকর্তার সঙ্গে উচ্চকণ্ঠে কথা বলেন এবং দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাকে শাসিয়ে আসেন।

গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত এক ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, আপনি কেন বাতিল করলেন। কত টাকা খাইছেন। চলেন তদন্ত করেন। আপনি এখান থেকে যাবেন আজকে তারপরে কথা হবে। না হলে কোন পর্যায়ে যাওয়া লাগবে সেই পর্যায়ে যাবো। ওই পর্যায়ে যাবো মিয়া। ফাজলামি মনে করেন চাকরি... (প্রকাশের অযোগ্য)।

এসময় খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানকে জানান।

তখন ওমর ফারুককে আবার বলতে শোনা যায়, আমার লোক মারা গেছে আমি মাটি দিতে গেছি। আপনি কেন রিপোর্ট দিলেন আমার গুদাম নাই?

মোবাইল ফোনে কথা বলা অবস্থায় ইউএনও ওমর ফারুককে অফিসে যেত বলেছেন বলে জানান খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত যুবদল নেতা ওমর ফারুক বলেন, যোগ্য প্রার্থী এবং আমার গুদাম একই। এরপরও আমার আবেদন অন্যায়ভাবে বাতিল করা হয়েছে। কেন আবেদন বাতিল করা হলো জানতে চাইলে অফিসার আমাকে কিছু না বলে দেওয়ালে নোটিশ দেওয়া আছে বলে সেখানে দেখতে বলেন। এগুলো নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হুট করে সংবাদ প্রকাশ না করার ব্যাপারে বলেন ওমর ফারুক।

এ বিষয়ে জানতে দেবীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব সুদেব কুমার দাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কল রিসিভ হয়নি।

এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সভাপতি মাহমুদুল হাসান কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ কারো বিরুদ্ধে থাকতে পারে। তাই বলে কারো অফিসে গিয়ে এমন আচরণ কাম্য নয়। আমি ওই ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের লটারি স্থগিত রেখেছি। আগামীকাল নিজে গুদাম পরিদর্শনে যাবো।

Read Entire Article