তথ্য সংগ্রহে গিয়ে জিম্মি দুই সাংবাদিক, হামলার শিকার

2 months ago 35

ফরিদপুরে তথ্য সংগ্রহকালে হামলার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। এছাড়া তাদের প্রায় দুই ঘণ্টা জিম্মি করে রাখে হামলাকারীরা। পরে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় জিম্মিদশা থেকে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

আহত দুই সাংবাদিক হলেন- আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হাসান মাতুব্বর (শ্রাবণ) ও মধুখালীর স্থানীয় সাংবাদিক তাওহীদুল ইসলাম (পাজবা)।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে জেলার মধুখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের মহিষাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল ইসলাম পিকুল, মধুখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি মনিরুজ্জামান মুন্নু ও থানা পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করা হয় তাদের। পরে তারা ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

জানা যায়, হামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দা ও ফরিদপুর চিনিকলের সিডিএ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, তার ভাই মাইক্রোবাসের চালক রানা মোল্যা, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহজাহান হোসেনসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জন ব্যক্তি।

আহত সাংবাদিক শ্রাবণ হাসান জাগো নিউজকে বলেন, সম্প্রতি ফরিদপুর শহরে এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েন সিডিএ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। ওই সময় তাকে মারধরও করা হয়। পরবর্তীতে ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওটি আমার কাছে আসে। তখন বিষয়টি জানার জন্য ওই কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তখন দাবি করেছিলেন, তিনি একটি ব্ল্যাকমেইল চক্রের ফাঁদে পড়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে ফোনে বিস্তারিত বলতে অপরাগতা প্রকাশ করে সরাসরি কথা বলতে অনুরোধ জানান। পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল চক্রের তথ্য সম্পর্কে জানতে ও তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিস্তারিত জানতে আমরা যোগাযোগ করে মধুখালীতে যাই।

আহত সাংবাদিক আরও বলেন, ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলাকালীন হঠাৎ তার স্ত্রী জানতে চান আমাদের ভিডিও কে দিয়েছে, কোথায় আমরা ভিডিও পেয়েছি। বিষয়টি গোপনীয়তার কারণে আমরা এড়িয়ে গেলে তিনি দাবি করেন আমরাই ওই ব্ল্যাকমেইল চক্র। ওই মুহূর্তে ১০-১২ জন আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের মোবাইল, ক্যামেরা ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় এবং টানাহেঁচড়া করে মারধর শুরু করে। এরপরই রাস্তা থেকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে আমাদের প্রায় ২ ঘন্টা জিম্মি করে রাখে। এছাড়া মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। পরে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় উদ্ধার হই।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার মামলা করা হবে।

এ বিষয়ে হামলাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম নুরুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শৈলেন চাকমা জানান, খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুই সাংবাদিককে উদ্ধার করে। তবে এখন পর্যন্ত ওই সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এন কে বি নয়ন/এফএ/জেআইএম

Read Entire Article