টাইগার শিবিরের দুই ব্যাটার তানজিদ তামিম ও তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে কিছুটা হলেও স্বপ্ন দেখছিলেন দেশের ক্রিকেটভক্তরা। কিন্তু সম্প্রতি তাদের পারফরম্যান্সে ভক্তদের মনে কিছু প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। তারা আসলে কতটা প্রতিশ্রুতিশীল, ব্যাট হাতে কতটা মেধাবী, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেশকে ভালো কিছু দেওয়ার ক্ষমতা কতটা আছে তাদের?
কেউ কেউ তো তানজিদ আর হৃদয়ের ব্যাটিং সামর্থ্য নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন।
যদিও বাংলাদেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটার মোহাম্মদ আশরাফুল তানজিদ তামিম ও হৃদয়কে ছোট করে দেখতে নারাজ। আশরাফুলের বিশ্বাস, তানজিদও হৃদয়ের সামর্থ্য আছে আরও ভালো খেলার। তারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বড় তারকা হওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তবে প্রতিভার স্ফুরণ ঘটেনি এখনো।
হৃদয়ের বর্তমান ফর্ম নিয়ে খানিক চিন্তিত আশরাফুল। সাবেক এই ক্রিকেটারের ধারণা, হৃদয়ের হয়তো কোনো ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যা আছে। যা তাকে ভেতরে ভেতরে ভোগাচ্ছে। ব্যাটিংকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। যে কারণেই ব্যাটে রান খরা।
তানজিদকে মেধাবী ও প্রতিভাবান আখ্যা দিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘আমি তানজিদ তামিমকে চিনি বেশ কয়েক বছর ধরেই। আমি তখন মোহামেডানের হয়ে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের প্রধান আসর প্রিমিয়ার লিগে খেলি। আমাদের সাথে ম্যাচে একটা ছোট ও অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলের হয়ে তানজিদ তামিম আমাদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিল। তামিমের সেই শতরানের ইনিংসটি আমার মনে দাগ কেটে আছে। তখনই আমার মনে হয়েছে তানজিদ তামিম জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্য।’
‘আমি বিশ্বাস, তানজিদ তামিমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুপারস্টার হওয়ার ক্ষমতা আছে। তার হাতে সব ধরনের শট আছে। পেস-স্পিন দুই ধরনের বোলিংয়ের বিপক্ষে ভালো খেলার ক্ষমতা আছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, নিজেকে মেলে ধরতে পারলেই ভালো হয়।’
অন্যদিকে হৃদয়কে নিয়ে আশরাফুলের মূল্যায়ন হঠাৎ করে কেমন যেন নিষ্প্রভ। সম্প্রতি কয়েক ম্যাচ ভালো করতে পারতেছেন না হৃদয়।
আশরাফুল বলেন, ‘নিশ্চয়ই কোনো একটা কারণ আছে। এমনিতে ছন্দে ছিল। হৃদয় একা নয়, যেকোনো খেলোয়াড়ই অফফর্মে যেতে পারে। সালাউদ্দীন ভাই (কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন) তার সাথে আলাপ করতে পারে। কী কারণে সে স্ট্রাগল করছে, তা সালাউদ্দিন ভালো জানতে পারবেন। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কোনো সমস্যা আছে কিনা, তা সালাউদ্দিন ভাই কথা বলে জানতে পারবেন আশা করি।’
আশরাফুল মনে করেন, প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও তানজিদ তামিম ও হৃদয় এখন ভারতের যসস্বি জয়সওয়াল ও তিলক ভার্মাদের ধারেকাছেও নেই। কারণ কী?
আশরাফুলের ব্যাখ্যা, ‘জয়সওয়াল ও তিলক ভার্মারা এখন রানের নহর বইয়ে দিচ্ছে। জয়সওয়াল ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে বিশেষ করে রঞ্জি ট্রফিতে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নামলেই ফিফটি আর শতক হাঁকাচ্ছে। তিলক ভার্মাও এখন নিজেকে মেলে ধরতে শুরু করছে। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে গিয়ে ২০০ স্ট্রাইকরেটে পর পর ২ ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছে। সে অনুযায়ী, তানজদি তামিম ও হৃদয়দের রান অনেক কম।’
আশরাফুলের পরামর্শ, ‘আমার কথা হলো- তানজিদ তামিমদের ওই জয়সওয়ালদের মতো চিন্তা করতে হবে। ওই রকম সব ফরম্যাটে যখন যেখানে খেলবে, সেখানে রান করার মানসিকতা থাকতে হবে। রানের ক্ষুধাটা ভেতরে থাকতে হবে। আমাকে রান করতে হবে। লম্বা লম্বা ইনিংস খেলতে হবে। ভেতরে এমন সংকল্প রাখতে হবে।’
এআরবি/এমএইচ/এএসএম