দফায় দফায় বিএনপির দু’গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, আহত ১৩

4 hours ago 4

ভোলার মনপুরায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের ১৩ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে তিনজনকে মনপুরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় ফের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাতে ভোলা-৪ (চরফ্যাসন-মনপুরা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এদিকে নৌবাহিনী ও পুলিশ দুই গ্রুপের সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কথা জানিয়েছেন মনপুরা থানার ওসি আহসান কবির।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রাজনৈতিক সফরে মনপুরায় আসেন। তিনি অসহায় সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের মাঝে উপহারসামগ্রী বিতরণ করেন। 

সন্ধ্যায় পূর্বনির্ধারিত কর্মিসভা ও ইফতার অনুষ্ঠান শেষে তিনি হাজিরহাট বাজারে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নরুল ইসলাম নয়ন গ্রুপের সমর্থকরা মিছিল বের করে। মিছিলকারীদের মধ্যে আপ্পান হাওলাদারের সঙ্গে নাজিম উদ্দিন আলম সমর্থক উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লোকমান মেম্বারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। 

এই সময় মিছিলকারীদের (নয়ন গ্রুপের) হামলায় আলম গ্রুপের ৩ জন গুরুতর আহত হন। পরে নুরুল ইসলাম নয়ন গ্রুপের সংঘবদ্ধ নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হাজিরহাট উত্তর বাজার ও হাসপাতালে দুই দফা হামলা চালায়।

হামলায় গুরুতর আহত হন (আলম সমর্থক), আরাফাত রহমান কোকো পরিষদের সভাপতি মো. আবদুর রহিম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লোকমান মেম্বার, ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দুলাল, ছাত্রদল নেতা শাহিন আলম, আবুল কাশেম, সাবিত ও সোহেল।

হাসপাতালে সংঘর্ষের সময় কর্তব্যরত আবাসিক মেডিকেল অফিসারের ফোনে খবর পেয়ে পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় বলে কালবেলাকে জানান মনপুরা থানার ওসি আহসান কবির।

তিনি আরও জানান, হাজিরহাট উত্তর বাজার ও হাসপাতালে দুই দফা মারামারি হয়েছে। সংঘর্ষে জড়িতরা নাজিম উদ্দিন আলম ও নুরুল ইসলাম নয়ন গ্রুপের নেতাকর্মী। এ ঘটনায় কোনো গ্রুপ লিখিত অভিযোগ করেনি।

নাজিম উদ্দিন আলম সমর্থক উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন মেম্বার বলেন, তিনি বিএনপির পার্টি অফিস থেকে বের হয়ে যাওয়ার পথে মন্নান হাওলাদারের ছেলে আপ্পান হাওলাদার তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হোন্ডা থেকে নামিয়ে মারধর করে। এই সময় তাদের নেতাকর্মীরা বাধা দিতে আসলে তাদেরকেও বগি দা ও লাঠিসোঁটা দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে।

এ বিষয়ে নয়ন গ্রুপের নেতা ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান হাওলাদার জানান, ইফতার শেষে নাজিম উদ্দিন আলম চলে যাওয়ার পরে তাদের সমর্থকরা মিছিল নিয়ে বাজারে যায়। এসময় আলম সমর্থকরা তাদের ওপর হামলা করে। এতে তাদের ৬/৭ জন আহত হয়েছেন। তবে তিনি তাদের নাম জানাতে পারেননি।

তিনি আরও বলেন, নাজিম উদ্দিন আলমকে নিয়ে তাদের নেতাকর্মীরা কোনো ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য বা স্লোগান দেননি। তারপরও তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ শামসুদ্দিন বাচ্চু চৌধুরী কালবেলাকে জানান, বিএনপির সাবেক সম্পাদক মান্নান হাওলাদারের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। সাবেক এমপি নাজিম উদ্দিন আলম যতবার মনপুরায় রাজনৈতিক সফরে এসেছেন ততবার তারা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছেন। তারা সত্যিকারার্থে আওয়ামী লীগের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

Read Entire Article