দুর্দান্ত জয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের যাত্রা শুরু করেছে ফ্রান্স। পোল্যান্ডের তারকিনস্কি অ্যারেনায় ইউক্রেনকে ২-০ গোলে হারিয়ে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করেছে ফরাসিরা।
শুক্রবার রাতে ম্যাচের ১১ মিনিটেই মাইকেল অলিসে ফ্রান্সকে এগিয়ে নেন। ব্র্যাডলি বারকোলার নিখুঁত দীর্ঘ পাস থেকে বল পান পিএসজি ফরোয়ার্ড অলিসে। এরপর ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠান।
এই গোলে ফ্রান্স ম্যাচের প্রারম্ভিক নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং প্রথমার্ধ জুড়ে তারা বিপজ্জনক আক্রমণ চালাতে থাকে। অলিসে তার দ্বিতীয় গোলের সুযোগও পেয়েছিলেন, তবে ইউক্রেন গোলরক্ষক আনাতোলি ত্রুবিন অসাধারণ একহাতি সেভ করে তাকে বঞ্চিত রাখেন।
ফ্রান্স বিরতির আগে বল দখল এবং আক্রমণে আধিপত্য বিস্তার করে। তাদের লক্ষ্যভেদী তিনটি শট ছিল, যেখানে ইউক্রেনের একটিও ছিল না। বারকোলার গতি ও বামদিকের দৌড় ইউক্রেনের ডিফেন্ডারদের জন্য বড় সমস্যা তৈরি করছিল। এদিকে এমবাপে ও অলিসেও প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে থাকেন, কিন্তু প্রথমার্ধে দ্বিতীয় গোলটি আসেনি।
বিরতির পর দেদিয়ের দেশমের দলকে কিছুটা চাপে ফেলে ইউক্রেন। সেট-পিস থেকে গোলের কাছাকাছি চলে যায় তারা। ইলিয়া জাবারনি একটি ফ্রি-কিক থেকে হেড করে পোস্টে বল লাগান, আর ইভান কালিউজনিইকে থামাতে গুরুত্বপূর্ণ ক্লিয়ারেন্স দেন ফরাসি ডিফেন্ডার ইব্রাহিমা কোনাতে।
এই মুহূর্তগুলো ফ্রান্সকে সতর্ক করে তোলে এবং তারা আবার আক্রমণে মনোযোগী হয়। অলিসে, বারকোলা ও বদলি হিসেবে নামা উসমান দেম্বেলে ক্রমাগত দ্বিতীয় গোলের জন্য চাপ বাড়াতে থাকেন।
অবশেষে ম্যাচের ৭ মিনিট বাকি থাকতে ফ্রান্স দ্বিতীয় গোল পায়। এমবাপে হঠাৎই জ্বলে ওঠেন। দৌড়ে বক্সে ঢুকে জাবারনিকে ঘুরিয়ে অসাধারণ শটে বল জালে পাঠান রিয়াল মাদ্রিদের ফরোয়ার্ড।
একক চেষ্টায় দুর্দান্ত এই গোল শুধু এমবাপের মানের প্রমাণই দেয়নি, বরং ফ্রান্সের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা থিয়েরি হেনরিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ক্ষুধার কথাও মনে করিয়ে দিল।
জাতীয় দলের জার্সিতে ৫১ গোল করে থিয়েরিকে ছুঁয়ে ফেলেছেন এমবাপে। অর্থাৎ এখন ফ্রান্সের ফুটবল ইতিহাসে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ডটি ভাগাভাগি করছেন এমবাপে ও থিয়েরি। এই দুজনের সামনে এখন রয়েছেন শুধু অলিভিয়ের জিরুর, যার রয়েছে ৫৭ গোলের রেকর্ড।
ম্যাচ শেষে এমবাপে মজার ছলে বলেন, ‘তিতিকে স্যালুট। তবে আমি এখন তাকে ছাড়িয়ে যেতে চাই। না, এটা আমার জন্য সম্মানের।’
কোচ দেশম দলের পারফরম্যান্সে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে হারের পর বাছাইপর্বটি জয়ে শুরু করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
এই জয়ের ফলে ফ্রান্স গ্রুপ ই-এর শীর্ষে নিজেদের অবস্থান মজবুত করেছে, অন্যদিকে ইউক্রেন নিজেদের সবচেয়ে ভালো সুযোগ হাতছাড়া করে ফের গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে।
এমএইচ/এমএস