বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে। দুর্গাপূজা ঘিরে এবারও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনা সদস্যরাও কাজ করবেন। আজ বুধবার থেকে মাঠে নামছেন তারা। দুর্গোৎসব চলার সময়ে গুজব ছড়িয়ে কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে ‘তাৎক্ষণিক অ্যাকশন’ নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ ও র্যাব।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, গত বছর সারাদেশে ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপ ও মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগর এলাকায় গত বছর ২৫২টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা হয়েছিল। এ বছর সারাদেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীর ২৫৮টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের চার মাস আগে এবারের দুর্গাপূজা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে গত বছরের তুলনায় এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অধিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। দেশের ৩২টি সীমান্তবর্তী জেলায় নেওয়া হয়েছে আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন
দুর্গাপূজার প্রস্তুতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক
সব জায়গায় এবার দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দুর্গাপূজায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে চালু হচ্ছে বিশেষ অ্যাপ
অপেক্ষার দুর্গা, উৎসবের দুর্গা
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চার মাস আগে দুর্গাপূজা হওয়ায় এবার শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বিভিন্ন সরকারের সময় গুজব ছড়িয়ে পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনা এখনো তাদের মনে দাগ কাটে। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকার সুষ্ঠুভাবে দুর্গাপূজা শেষ করতে বদ্ধপরিকর। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও বেশ সজাগ।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পূজা উদযাপনে যা যা করণীয় তার সবকিছু প্রস্তুত। উসকানি বা গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না করতে পারে সেদিকে কড়া নজরদারি চলছে। গুজব ছড়ালে মুহূর্তের মধ্যে গুজবকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশেষ করে সারাদেশে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনা সদস্যরাও কাজ করবেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অশুভ চক্র সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে প্রতিমা ভাঙচুরের মাধ্যমে অনৈতিক প্ররোচনা সৃষ্টি করছে। গত কয়েক দিনে কুষ্টিয়া, গাজীপুর ও নেত্রকোনায় প্রতিমা ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে, যেটি উদ্বেগজনক। এ কর্মকাণ্ড শুধু ধর্মীয় অনুভূতিকে আহত করে না; বরং সমাজের নৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংহতিতেও ক্ষতি করে।
আরও পড়ুন
দুর্গাপূজায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ প্রস্তুত: আইজিপি
দুর্গাপূজা নির্বিঘ্ন করতে নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান ফখরুলের
দুর্গাপূজায় সরকারি ছুটি ৩ দিনসহ হিন্দু মহাজোটের ৪ দাবি
দুর্গাপূজা ঘিরে কোনো ধরনের হামলার হুমকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দুর্গাপূজায় ২৯ জেলা ঝুঁকিপূর্ণ
দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের পাঁচটি জেলাকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২৪টি জেলাকে মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ‘সম্প্রীতি যাত্রা’ নামের একটি সামাজিক প্ল্যাটফর্ম। গত ২০ সেপ্টেম্বর তারা এ কথা জানায়।
উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলো হলো- ঢাকা, রংপুর, যশোর, চাঁদপুর ও নোয়াখালী। মাঝারি ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলো হলো গাজীপুর, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, কুষ্টিয়া, সুনামগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী ও নেত্রকোনা। দেশের অন্য জেলাগুলোকে নিম্ন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছে সম্প্রীতি যাত্রা।
অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ৭০৫৪ মণ্ডপ
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৪তম সভা সূত্রে জানা যায়, দেশে এবার ৩১ হাজার ৫৭৬ মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ সাত হাজার ৫৪টি। ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপের সংখ্যা ১০ হাজার ৯৭২টি। আর ঝুঁকি নেই ১৩ হাজার ৫৫০টি মণ্ডপে। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপের মধ্যে মেট্রোপলিটন এলাকাগুলোয় আছে ৩৯৬টি। রেঞ্জ এলাকায় আছে ছয় হাজার ৬৫৮টি। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত একটি তালিকা সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তায় নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই সূত্র জানায়, অধিক ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে আটজন করে আনসার সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর অন্য মণ্ডপগুলোতে ছয়জন করে আনসার সদস্য থাকবেন। এছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবেন পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া পূজা উদযাপন কমিটিগুলোকে নিজ উদ্যোগে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
‘নিরাপত্তা বাহিনীর ঘেরাটোপে থেকে ধর্ম পালন করতে চাই না’
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সনাতন হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সেই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না নিরাপত্তা বাহিনীর ঘেরাটোপে থেকে ধর্ম পালন করতে। আমরা চাই নাগরিক হিসেবে মুক্তভাবে যার যার ধর্ম পালন করতে। এ অধিকার আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ভূমিকা পালন করছে, আমরা এ জন্য কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমাদের এমন একটি দেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে মানুষের ধর্মীয় উৎসব পালনে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ঘেরাটোপের প্রয়োজন হবে না।’
‘গতবারের চেয়ে এবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন ভালো’
নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এবারের শারদীয় দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। পূজা সামনে রেখে খারাপ কোনো কিছু যাতে না ঘটে, সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
গতবারের চেয়ে এবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন ভালো উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এবার সারাদেশে ৩৩ হাজারের মতো পূজামণ্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যে যাতে পূজা উদ্যাপন করা যায়, সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
দুর্গাপূজা ঘিরে যেন স্বার্থান্বেষী মহল অপচেষ্টা চালাতে না পারে
দুর্গাপূজা উপলক্ষে জমে উঠেছে কেনাকাটা
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৩৭ প্রতিষ্ঠানকে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি
উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে: ডিএমপি কমিশনার
পূজা উপলক্ষে নিরাপত্তাব্যবস্থার কথা তুলে ধরে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় সাতজন স্বেচ্ছাসেবী, আটজন আনসার সদস্য ছাড়াও পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা থাকবেন। এবারের পূজায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী রাখা হচ্ছে। তাই এবার পূজায় কোনো ধরনের অসুবিধা হবে না। পূজামণ্ডপের সামনে দোকান থাকলেও মেলার আয়োজন করতে পারবে না।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য সমতা, ন্যায়বিচার নিশ্চিতের মাধ্যমে মর্যাদা সর্বাগ্রে স্থান দেওয়া হয়েছে। এ দেশে নানান জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও সংস্কৃতির লোকের বসবাস। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাষ্ট্রের পাশাপাশি মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজকে নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকা আরও কার্যকর হওয়া আবশ্যক। রাষ্ট্রকাঠামো এমন হওয়া উচিত, যাতে সবাই মিলে নিজ নিজ উৎসব নির্বিঘ্নে পালন করতে পারে।’
‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও সরকারের কাছে সাহায্য চাইতে হয়’
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও দুর্গাপূজার নিরাপত্তার জন্য সরকারের কাছে সাহায্য চাইতে হয়। দুর্গাপূজার মাত্র কয়েক দিন বাকি। গত কয়েকদিনে ছয়টি জেলায় দুর্গাপ্রতিমার ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। সরকারের নীরবতায় এ দেশের সংখ্যালঘুদের ওপর বারবার আক্রমণ করা হচ্ছে।’
সরকারের দৃঢ়তা লক্ষণীয় নয়
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবারের পূজায় আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। কারণ পূজার আগে এ পর্যন্ত সাত-আটটি ঘটনা ঘটেছে যা আশঙ্কাজনক। কিন্তু যারা এ ধরনের কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কী অ্যাকশন নিয়েছে সেই দিকটি আমাদের কাছে দৃশ্যমান নয়। যারা পূজার আগে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে পূজার সময় তারা ঘটাবে না এ নিশ্চয়তা কে দিতে পারবে? স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপি, পুলিশ কমিশনার ও সারাদেশের পুলিশ সুপাররা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মিটিং করেছেন; এটি ভালো দিক। কিন্তু কোনো কিছু ঘটবে না সেই মানসিকতা কিংবা সরকারের দিক থেকে দৃঢ়তা লক্ষণীয় নয়। কারণ ঘটনা ঘটলে বিচার হচ্ছে না। বিগত সরকারের আমলেও বিচার হয়নি।’
৩২ সীমান্ত জেলার পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় বিজিবি
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশের সীমান্তবর্তী ৩২ জেলায় পূজামণ্ডপে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন বিজিবির সদস্যরা। পাশাপাশি পূজা ঘিরে সীমান্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে টহল, রেকি ও মোবাইল পেট্রোল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া অনুপ্রবেশ, চোরাচালান ও নাশকতাসহ যে কোনো অপতৎপরতা রোধে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’
পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের সব ধরনের প্রস্তুতি
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘দুর্গাপূজা কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত কোনো হুমকি নেই। তবে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। ডিবি পুলিশের পাশাপাশি থানা ও পেট্রোল টিম কাজ করবে। সর্বোচ্চ প্রস্তুতির পরিকল্পনা রয়েছে। কোনো অপচেষ্টা সফল হবে না। পাশাপাশি গুজব প্রতিরোধে ডিবির সাইবার ইউনিট ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।’
হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় র্যাবের অতিরিক্ত জনবল
জানতে চাইলে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার ইন্তেখাব চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, পুরো পূজার সময় র্যাবের মোবাইল পেট্রোল টিম প্রত্যেক পূজামণ্ডপের আশপাশে কাভারেজে থাকবে। পূজা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বোম ডিসপোজাল ইউনিট, ডগ স্কোয়াড ও সাইবার মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক অন ডিউটিতে থাকবে। গত বছর এবং তার আগের বছরগুলোতে যেসব মণ্ডপে ছোটবড় ঘটনা ঘটেছে তা মাথায় রেখে র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা চালানো হচ্ছে। হিন্দু অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত জনবল দিয়ে সব সময় টহলে রাখা হবে।
তিনি বলেন, কোথাও কোনো ধরনের প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে র্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেবে।
প্রস্তুত সোয়াট, সিআরটি ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় পুলিশ সতর্ক অবস্থায় থাকবে। প্রতিটি মণ্ডপে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, আনসার, বিজিবি ও কোস্ট গার্ড মোতায়েন থাকবে। দুর্গাপূজা চলাকালে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে। এছাড়া সোয়াট, ক্রাইম রেসপন্স টিম (সিআরটি) ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। দুর্গাপূজা উপলক্ষে পুলিশ সদর দপ্তর এবং অন্যান্য পুলিশ ইউনিটে মনিটরিং সেল চালু থাকবে।
শাহাদাত হোসাইন বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে পুলিশ পূজার আগে, পূজা চলাকালে এবং প্রতিমা বিসর্জন ও পূজা–পরবর্তী তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে পূজাকেন্দ্রিক পুলিশের নিরাপত্তা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন
দুর্গাপূজায় প্রাথমিকে ১১ দিন, মাধ্যমিক-কলেজে ১২ দিনের ছুটি
কলকাতায় দুর্গাপূজার তোড়জোড়
দুর্গাপূজা উপলক্ষে চট্টগ্রামে পুলিশের মতবিনিময় সভা
দুর্গাপূজায় ৭০০ মণ্ডপ ঝুঁকিপূর্ণ, সবচেয়ে বেশি সাতক্ষীরায়
পূজায় অ্যাপসে নজরদারি করবে আনসার-ভিডিপি
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপপরিচালক এবং গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. আশিকউজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনে আনসার-ভিডিপি এবার প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি ব্যবস্থা চালু করেছে। পূজাকালীন দায়িত্বে থাকা দুই লক্ষাধিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য এবার প্রথমবারের মতো ‘শারদীয় সুরক্ষা অ্যাপস’ ব্যবহার করে মাঠপর্যায়ের ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে রিপোর্ট করবেন।
আশিকউজ্জামান বলেন, ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত টানা নয়দিন সারাদেশের ৩১ হাজার ৫৭৬টি পূজামণ্ডপে আনসার-ভিডিপির সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় সেগুলো তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। অধিক গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে আটজন, গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে ছয়জন এবং সাধারণ মণ্ডপে ছয়জন করে সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
টিটি/এমএমএআর/এমএফএ