অত্যাধুনিক ক্লাস্টার ওয়ারহেডযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলকে রীতিমতো বিস্মিত করেছে ইয়েমেনি যোদ্ধারা। এই হামলার মাধ্যমে তারা যেন হয়ে উঠেছে দ্বিতীয় ইরান। কারণ চলতি বছরেই ইরান একই অস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ভেদ করেছিল।
গেল ২২ আগস্ট গভীর রাতে তেল আবিবে চালানো হামলায় ইয়েমেনিরা এই ভয়ংকর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) স্বীকার করেছে, তাদের চার স্তরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা—মার্কিন থাড, আলোচিত আয়রন ডোম, অ্যারো ও ডেভিড’স স্লিং—কোনোটিই মিসাইলটিকে থামাতে পারেনি। ফলে বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো শহর।
পরে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হামলায় ব্যবহার করা হয় ক্লাস্টার ওয়ারহেডযুক্ত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। সাধারণ মিসাইলের চেয়ে এটি অনেক ভয়াবহ। কারণ ভূমি থেকে সাত থেকে আট হাজার মিটার উচ্চতায় পৌঁছে এটি ছোট ছোট ওয়ারহেড বা সাবমিউনিশনে বিভক্ত হয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মুহূর্তেই ঘটে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ। এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছে বলে স্বীকার করেছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম।
দুই বছরের সংঘাতে এবারই প্রথমবারের মতো ইয়েমেন ক্লাস্টার মিসাইল ব্যবহার করল। এতদিন পর্যন্ত কেবল যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীনসহ কিছু পরাশক্তির কাছেই এই অস্ত্র ছিল। মধ্যপ্রাচ্যে এর মালিক ইরানও। ২০২১ সালে মাত্র ১২ দিনের যুদ্ধে এই সমরাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলকে বিপর্যস্ত করেছিল তেহরান। বিশ্লেষকদের মতে, এবার ইয়েমেনিদের হাতে সেই অস্ত্র তুলে দিয়েছে ইরান, যাতে ইসরায়েলকে চাপে রাখা যায়।
এই ঘটনায় স্পষ্ট হয়েছে, ইয়েমেন এখন আর সাধারণ যোদ্ধা বাহিনী নয়; বরং ইরানের মতো আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এক শক্তিশালী সামরিক শক্তিতে রূপ নিচ্ছে। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে নতুন ভারসাম্য তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।