বেতন বৃদ্ধি ও ভাতা দেওয়াসহ একাধিক দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো রাজশাহী-ঢাকা রুটে দূরপাল্লার অধিকাংশ বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে পরিবহন শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার সকালেও রাজশাহীর শিরোইল বাস টার্মিনালে ন্যাশনাল, দেশ, হানিফ, গ্রামীণ ও শ্যামলী ট্রাভেলসের কাউন্টার বন্ধ দেখা গেছে। ফটকের সামনে ঝুলছে কর্মবিরতির ব্যানার, শ্রমিকরা মাঝে মাঝে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তাদের বেতন বাড়ানো হয়নি। বর্তমানে চালক এক ট্রিপে পান মাত্র ১২০০ টাকা, হেলপার ৬০০ টাকা ও সুপারভাইজার আরও কম। তারা দাবি তুলেছেন, চালকের বেতন ট্রিপপ্রতি ২ হাজার, হেলপারের ১ হাজার ও সুপারভাইজারের ১১০০ টাকা নির্ধারণের পাশাপাশি হোটেল ভাড়া ও খাবারের খরচ ভাতা হিসেবে দেওয়ার জন্য।
ন্যাশনাল ট্রাভেলসের চালক আলী হোসেন বলেন, ১৭ বছর ধরে আমাদের বেতন বাড়ানো হয়নি। প্রতিবার মালিক পক্ষ আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কিছু হয় না। তাই এবার সব শ্রমিক একসঙ্গে আন্দোলনে নেমেছি।
শ্রমিক নেতা মো. সেলিম বলেন, ১৭ বছর ধরে বেতন বাড়েনি। প্রতিবার মালিক পক্ষ শুধু আশ্বাস দেয়, বাস্তবে কিছু হয় না। এবার দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। হয় বেতন বাড়বে না হয় গাড়ির চাকা গড়বে না।
রাজশাহী পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম হেলাল বলেন, আমরা বারবার মালিক পক্ষের সাথে বসেছি। সর্বশেষ তারা আশ্চর্য দিয়েছিল। কিন্তু সেটির বাস্তব প্রয়োগ না হয় শ্রমিকরা আবারও আন্দোলনে নেমেছে।
তিনি বলেন, রাজশাহী ঢাকাকে আমি বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে একতা পরিবহন চালু রয়েছে। আমরা বলেছি কেউ যদি স্বেচ্ছায় গাড়ি চালাতে চায় তাকে বাধা দেওয়া যাবে না। শ্রমিকটা শ্রমিকদের আন্দোলন করবে। তাদের দাবিতে পূরণ হলে তবেই গাড়ি চালাচ্ছ শুরু হবে।
এদিকে হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা বিকল্প পরিবহনের খোঁজে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তবে একতা পরিবহন ও কিছু লোকাল বাস চলায় সেখানে উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। ট্রেনের টিকিট মিলছেও না বলে অভিযোগ করেছেন অনেক যাত্রী।
ঢাকাগামী যাত্রী শফিকুল ইসলাম বলেন, টিকিট আগে কেটে রেখেছিলাম, কিন্তু এসে দেখি কাউন্টার বন্ধ। জরুরি কাজে ঢাকায় যেতে হবে, অথচ কোনো উপায় নেই। বাধ্য হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে।
আরেক যাত্রী নাসরিন আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সারাদিন ঘুরেও টিকিট পাইনি। শিশু সন্তান নিয়ে পথে পথে হয়রানি পোহাচ্ছি। এভাবে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলা ঠিক নয়।
সাখাওয়াত হোসেন/এমএন/জিকেএস