‘দ্য উইজার্ড অব দ্য ক্রেমলিন’ কীভাবে জন্ম নিল পুতিনের রাশিয়া

4 hours ago 2

ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হলো অলিভিয়ে আসায়াস পরিচালিত বহুল প্রতীক্ষিত ছবি ‘দ্য উইজার্ড অব দ্য ক্রেমলিন’। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন হলিউড তারকা জুড ল’। তবে এই ছবির পুতিন একেবারেই ভিন্ন রূপে ধরা দিয়েছেন—শান্ত, সংযত ও হিসেবি।

গিউলিয়ানো দা এমপোলির ২০২২ সালের বেস্টসেলার উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই ছবির মূল চরিত্র আসলে পুতিন নন, বরং পল ড্যানো অভিনীত ভাদিম বারানোভ। বাস্তব জীবনের প্রভাবশালী রুশ রাজনীতিবিদ ভ্লাদিস্লাভ সুরকভ থেকে অনুপ্রাণিত এই চরিত্রটি ক্রেমলিনের অন্তরালের কৌশলবিদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

গল্পের শুরু ১৯৯০-এর দশকে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর স্বাধীনতার আবহে বেড়ে ওঠা বারানোভ একসময় মঞ্চনাটকের স্বপ্ন ছেড়ে টেলিভিশনের সঙ্গে যুক্ত হন। সেখানে জনগণের রুচি বোঝার অভিজ্ঞতা তাকে টেনে নিয়ে যায় রাজনীতির অন্দরমহলে। শিগগিরই ধনকুবের বরিস বেরেজোভস্কি তাকে প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিনের পুনর্নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্ত করেন। টেলিভিশনের কৌশল কাজে লাগিয়ে জনগণের সামনে নতুনভাবে হাজির করা হয় ইয়েলৎসিনকে।

কিন্তু বেরেজোভস্কির দৃষ্টি তখন ভবিষ্যতের দিকে। তিনি মনে করতেন, রাশিয়ার জনগণ আর শুধু অর্থলোভী ব্যবসায়ীদের নয়, চাই এক ‘কঠোর ও সরল’ নেতাকে। সেই হিসেবেই সামনে আসেন ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন। বেরেজোভস্কির ভুল ছিল, ক্ষমতায় বসার পরও পুতিন তাকে প্রয়োজন হবে বলে মনে করা। ইতিহাস দেখিয়েছে, সেই ভুলের মূল্য তাকে নির্বাসনে গিয়ে চুকাতে হয়। অন্যদিকে বারানোভ নিজের মেধা ও কৌশল দিয়ে ক্রেমলিনে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেন।

ছবিতে বারানোভের দর্শনই হয়ে ওঠে মূল বার্তা : রাজনীতিতে বাস্তবতার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে চিত্র। মানুষের চোখে যা তুলে ধরা হয়, তাই হয়ে ওঠে সত্য। জনসভাকে বর্ণিল ও চটকদার করে তোলা, বিরোধীদের কিছুটা আওয়াজ টিকিয়ে রেখে সেটিকে নিজের শক্তির প্রমাণে পরিণত করা, ইন্টারনেটে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বাস্তবতাকে আড়াল করা—এসবই আধুনিক পপুলিজমের ভিত্তি রচনা করেছে।

অলিভিয়ে আসায়াস এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘দ্য উইজার্ড অব দ্য ক্রেমলিন’ কেবল পুতিনের রাশিয়ার জন্মকাহিনি নয়; এটি সমকালীন বিশ্বের রাজনৈতিক বাস্তবতাকেও উন্মোচন করে। দর্শকদের কাছে তাই ছবিটি হয়ে উঠতে পারে শুধু এক ঐতিহাসিক কাহিনি নয়, বরং বর্তমান সময়ের জন্যও এক গুরুত্বপূর্ণ পাঠ।

Read Entire Article