ধারণক্ষমতার পাঁচগুণ টিকেট বিক্রি, খেলা না হওয়ায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

1 day ago 6

চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে স্থগিত করা হয়েছে কক্সবাজারে জেলা প্রশাসক (ডিসি) গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা।

ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ দর্শকের এলোমেলো উপস্থিতির কারণে সঠিক সময়ে খেলা শুরু হয়নি। এজন্য টিকেট কেটে গ্যালারি ও মাঠে ঢোকা দর্শকরা উত্তেজিত হয়ে ভাঙচুর শুরু করেন। তাদের চেয়ার ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে প্রেস বক্স, জেলা ক্রীডা সংস্থার অফিস তছনছ করে ফেলা হয়েছে।

দর্শকদের এ তাণ্ডব থামাতে ব্যাপক লাঠিলার্জ শুরু করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। ভাঙচুর ও সংঘর্ষে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও), পুলিশ কর্মকর্তাসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

ধারণক্ষমতার পাঁচগুণ টিকেট বিক্রি, খেলা না হওয়ায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ছিল আজ বিকেলে। ফাইনালে রামু ও টেকনাফ উপজেলা ফুটবল দল মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল। দীর্ঘদিন পর ফুটবল উন্মাদনায় দুই উপজেলা এবং বিভিন্ন এলাকার ক্রীড়াপ্রেমীরা সকাল থেকে স্টেডিয়াম এলাকায় ভিড় জমান। ধারণক্ষমতা ১০ হাজার হলেও খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয় কমপক্ষে অর্ধলাখ দর্শক।

টিকিট কালোবাজারিতে ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ টিকেট বিক্রি হওয়ায় ৫০ টাকার টিকিট দেড় হাজার টাকায় কিনে খেলা দেখতে উপস্থিত হন অনেক দর্শক। বিকেল ৪টার দিকে গ্যালারি ছাড়িয়ে গেট ভেঙে মাঠে ঢুকে অবস্থান নেন দর্শকরা। এতে খেলা পরিচালনা কোনোমতেই সম্ভব হয়ে উঠছিল না।

পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী। কিন্তু তারাও মাঠ থেকে দর্শক তাড়াতে ব্যর্থ হন। এরই মাঝে নির্ধারিত সময়ে খেলা শুরু না হওয়া বিক্ষুব্ধ দর্শকরা শুরু করেন ইটপাটকেল নিক্ষেপ। আসবাবপত্র ভেঙে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পাশাপাশি তছনছ করা হয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিসহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয় ও প্রেস বক্সও।

ধারণক্ষমতার পাঁচগুণ টিকেট বিক্রি, খেলা না হওয়ায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

এসময় কক্সবাজার সদরের ইউএনও নীলুফার ইয়াসমিন চৌধুরী, সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন, একাধিক সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

খেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মাহবুব উল আলম। তাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানায় জেলা প্রশাসন সূত্র।

টেকনাফ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার একজন সদস্য বলেন, ‘আয়োজক কমিটির গাফিলতির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। দীর্ঘদিন পর চলা ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে ক্রীড়া উন্মাদনা সৃষ্টি হওয়ায় ফাইনাল খেলা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সতর্ক থাকা উচিত ছিল।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, আয়োজক কমিটির পক্ষে সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। খেলা শুরু হতে একটু দেরি হওয়ায় দর্শকরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। দর্শকরা স্টেডিয়ামের বিভিন্ন আসবাবপত্র, বেষ্টনী ভাঙচুর করতে থাকেন। এতে ইউএনওসহ অনেকে আহত হয়েছেন।

ধারণক্ষমতার পাঁচগুণ টিকেট বিক্রি, খেলা না হওয়ায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

তিনি বলেন, এটা খুবই অনভিপ্রেত। খেলা স্থগিত করা হয়েছে। তারিখ পরে নির্ধারণ করা হবে।

গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে জেলার ৯ উপজেলা নিয়ে শুরু হয় ডিসি গোল্ডকাপ ফুটবল টুনার্মেন্ট। নকআউট পদ্ধতিতে চলা খেলায় উখিয়া উপজেলাকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে টেকনাফ। আর মহেশখালীকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে রামু উপজেলা।

শুক্রবার দুই দলের মাঝে সমাপনী ম্যাচ হতে গিয়েও অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি মধ্য দিয়ে বাজে ইতিহাস গড়লো জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট।

সায়ীদ আলমগীর/এসআর/এএসএম

Read Entire Article