নকশা অনুমোদন ছাড়াই চলছে দুই কোটি টাকার কাজ

3 months ago 6

সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে কেঁচো খুড়তে গিয়ে সাপ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (২৮ মে) ঈদ উল আজহাকে সামনে রেখে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি ও যাত্রী হয়রানির অভিযোগে অভিযান চালায় দুদক।

অভিযানে টিকিটের অতিরিক্ত দাম আদায় ও টিকিট কেলেঙ্কারির প্রমাণ পায়। নকশা অনুমোদন ছাড়াই দুই কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ, নিলাম ছাড়াই পুরোনো রড বিক্রি ও স্টাফ কোয়াটারে বহিরাগতদের ভাড়া দেওয়ার মতো ঘটনার প্রমাণও পেয়ে দুদক। তাছাড়াও গেটকিপার বিরুদ্ধে টিকিট কেলেঙ্কারির অভিযোগের সত্যতা পেয়ে দুদক।

বুধবার (২৮ মে) দুপুরে সারাদেশের রেলওয়ে স্টেশনে একযোগে অভিযান পরিচালনার অংশ হিসেবে সিলেটেও অভিযানে নামে দুদক। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদক সিলেট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন।

জানা গেছে, দুদকের অভিযানে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগের সত্যতা ছাড়াও অনুমোদনহীন নকশায় প্লাটফর্ম সংস্কার, সংস্কার কাজে পুরনো রড বিক্রি করে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি, রেলের কেনাকাটায় অনিয়ম ও স্টাফ কোয়াটারে বহিরাগতদের ভাড়া মতো অনিয়মের তথ্য পেয়েছে দুদক।

দুদক জানায়, স্টেশনের পুরোনো প্লাটফর্ম থেকে উত্তোলন করা সাড়ে তিন টন রড নিলাম ছাড়া এক লাখ ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। পরে এসব টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া রেলপথ নির্মাণে ব্যবহারের জন্য আনা পাথরের হিসাবও যথাযথ নয়। পাথরের এক-তৃতীয়াংশ সুনামগঞ্জের ছাতকে পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও এর কোনো লিখিত নথি দেখাতে পারেনি রেল কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া স্টেশনের দুটি নতুন প্লাটফর্ম সংস্কারে দুই কোটি টাকার কাজ চলছে। যার নকশার কোনো অনুমোদন নেই।

টিকিট কালোবাজারির বিষয়েও তদন্তে সত্যতা পেয়েছে দুদক। অভিযানে আজিজ নামের এক ব্যক্তি স্লিপার ক্লাসের টিকিটের জন্য ১২০০ টাকার পরিবর্তে ২০০০ টাকা দাবি করেন। যিনি স্টেশনে গেট কিপারের দায়িত্বে রয়েছেন।

নকশা অনুমোদন ছাড়াই চলছে দুই কোটি টাকার কাজ

অভিযান শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক জুয়েল মজুমদার বলেন, অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ঈদ উপলক্ষে টিকিট কালোবাজারি ও যাত্রী হয়রানি রোধ। কিন্তু এখানে এসে একের পর এক ভয়াবহ অনিয়মের চিত্র আমরা পেয়েছি।

দুদক কর্মকর্তা জুয়েল মজুমদার বলেন, নকশা এখনো অনুমোদিত নয়। অথচ সেই অনুযায়ী কাজ চলছে। যদি সরকার নকশা বাতিল করে তাহলে জনগণের দুই কোটি টাকা পানিতে যাবে।

জুয়েল মজুমদার আরও বলেন, টিকিট থাকার কথা অনলাইনে। অথচ দালালরা সেগুলো কীভাবে নিজেদের কাছে রেখে দেয় সেটি খতিয়ে দেখা হবে। দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, সিলেট রেলওয়ে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে পাঠানো হবে।

আহমেদ জামিল/আরএইচ/এএসএম

Read Entire Article