পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের বোলান জেলায় যাত্রীবাহী ট্রেনে হামলা চালিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। পরে ট্রেনটিতে থাকা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জিম্মি রেখে নারী-শিশুসহ সাধারণ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেয়। কিন্তু স্বরাষ্ট্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী এর উল্টো তথ্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন, জাফর এক্সপ্রেস থেকে কিছু নারী ও শিশু জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার সন্ত্রাসীদের দাবি খারিজ করছি। আক্রমণকারীরা তাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। সেনা অভিযান থেকে বাঁচতে হামলাকারীরা এ কাজ করছে।
জিও নিউজের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় তালাল বলেন, জীবনের ঝুঁকির কারণে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্কতা অবলম্বন করে অভিযান চালাচ্ছে। তারা পুরো শক্তি দিয়ে অভিযান পরিচালনা করছে এবং শিগগির সমস্ত যাত্রীকে উদ্ধার করা হবে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) স্থানীয় সময় সকালে বোলান জেলার মুশকাফ এলাকায় জাফর এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী ট্রেনটিতে অতর্কিত হামলা চালায় বিএলএর সদস্যরা। স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলিবর্ষণের মাধ্যমে তারা ট্রেনটি থামিয়ে দেয় এবং যাত্রীদের জিম্মি করে।
স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, ট্রেনটিতে প্রায় ৫০০ জন যাত্রী ছিল। হামলার পর সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলে এবং বিশেষভাবে সেনাবাহিনীর সদস্যদের টার্গেট করে। হামলাকারীদের গুলিতে ট্রেনচালক গুরুতর আহত হন, ফলে ট্রেনটি একটি টানেলের ভেতরে আটকে যায়।
এদিকে বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এক বিবৃতিতে জানায়, আমাদের যোদ্ধারা জাফর এক্সপ্রেসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ২০ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে এবং ১৮২ জনকে জিম্মি করা হয়েছে।
তবে সাধারণ যাত্রীদের বিষয়ে তারা জানিয়েছে, নারী, শিশু, প্রবীণ এবং বেলুচ নাগরিকদের নিরাপদে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের নিরাপদ পথে চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের তারা আটক রেখেছে।
বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীটি পাকিস্তানি সেনাদের উদ্ধার অভিযান বন্ধ করার জন্য কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যদি সেনাবাহিনী ড্রোন হামলা চালায় বা সামরিক অভিযান চালিয়ে যায়, তাহলে এক ঘণ্টার মধ্যে সব জিম্মিকে হত্যা করা হবে। তাদের দাবি পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এই অঞ্চল ছেড়ে না গেলে সব জিম্মিকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।
এদিকে ট্রেনে বন্দুকধারীদের হাতে জিম্মি ১০৪ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এ সময় অভিযানে অন্তত ১৬ জন বন্দুকধারী নিহত হয়েছে। সামরিক বাহিনীর সূত্রে এ সংবাদ প্রকাশ করেছে জিওনিউজ। তবে এখনও ঠিক কতজন জিম্মি রয়েছেন বা সেখানের বর্তমান পরিস্থিতি কী তা নিয়ে ধোয়াশা দেখা দিয়েছে।