অ্যাম্পাওয়ারিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (ইডিপি) উদ্যোগে আলোচনা সভা, ইফতার মাহফিল ও নারী দিবস উদযাপন করা হয়েছে। ৮ মার্চ নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে কোম্পানিগঞ্জ সমিতি ভবনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য ছিল, ‘নারীর সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, একটি উন্নত সমাজ গঠনের পূর্বশর্ত।’ আলোচকরা নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক সুরক্ষা, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সমতার পরিবেশ গড়ে তোলার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
আলোচনা সভায় ইডিপির বিভিন্ন প্রশিক্ষণার্থী, স্বেচ্ছাসেবক এবং কমিউনিটি নেতারা নারীর সম্মান ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তাদের মতামত তুলে ধরেন। তারা বলেন, নারীর প্রতি সম্মান ও মর্যাদা দেওয়া আমাদের সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব। নারীকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করতে হবে, লিঙ্গভেদে বৈষম্য দূর করতে হবে।
বক্তারা বলেন, নারীরা পরিবার, সমাজ ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই নারীকে শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সমান সুযোগ দেওয়া জরুরি। সামাজিক ও পারিবারিক পর্যায়ে নারীর প্রতি সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে পারলেই একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠন সম্ভব।
- আরও পড়ুন
- কম্পিউটার প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে ইডিপির সনদপত্র বিতরণ
- ইডিপির সনদ বিতরণ ১৯ অক্টোবর
- নিউইয়র্কে উইমেন্স এন্টারপ্রেনার অ্যাওয়ার্ডস পেলেন আম্বিয়া
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ইডিপির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক আম্বিয়া বেগম। তিনি বলেন, নারী দিবস উদযাপন শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমাদের সমাজে এখনও নারীরা বিভিন্নভাবে বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। তাদের ক্ষমতায়ন এবং আত্মনির্ভরশীল করতে হলে আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ইডিপি ১০ বছর ধরে নারীদের দক্ষতা উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সমাজে তাদের অবস্থান সুসংহত করতে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাই, নারীরা যেন স্বাবলম্বী হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন এবং সমাজে সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারেন।
এ সময় বক্তব্য দেন ফরিদা শিরিন খান, ফৌজিয়া নাসরিন, জোসনা আরা বেগম ও ফেরদৌস নাসরিন। তারা বলেন, নারী যদি সুশিক্ষিত হয়, তাহলে একটি পরিবার শিক্ষিত হয়। আর শিক্ষিত পরিবার সমাজ ও জাতির উন্নয়নের ভিত্তি গড়ে তোলে। নারীর সম্মান নিশ্চিত করতে হলে পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরে মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে।
- আরও পড়ুন
- ব্রুকলিন ডিস্ট্রিক্ট সিটি কাউন্সিলর শাহানা হানিফকে ফুলেল শুভেচ্ছা
- নিউইয়র্কে জাঁকজমকপূর্ণ পিঠা উৎসব
- আধুনিক দাসত্ব এবং মানবপাচার
অতিথিরা বলেন, নারীদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সংহতি নিশ্চিত করতে পারলে তাদের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। নারীর উন্নয়ন মানে শুধু অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নয় বরং পারিবারিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিটি স্তরে তাদের সম্মান নিশ্চিত করা জরুরি।
আগামীতে নারীদের ক্ষমতায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, পারিবারিক নিরাপত্তা এবং নেতৃত্বে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আরও জোরালোভাবে কাজ করবে। আমাদের লক্ষ্য হলো নারীদের এমনভাবে দক্ষ করে তোলা, যেন তারা আর্থিক ও সামাজিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সংগঠনটির প্রশিক্ষণার্থী এবং নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরা নারীর সম্মান, নিরাপত্তা এবং সামাজিক সুরক্ষার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বলেন, একজন নারী কেবল মা, স্ত্রী বা কন্যা নয়, তিনি একজন মানুষ। তার প্রতি শ্রদ্ধা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আজকের তরুণ প্রজন্ম যদি নারীর অধিকার রক্ষায় এগিয়ে আসে, তাহলে ভবিষ্যতে আমরা একটি সুন্দর ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে পারব।
এমআরএম/এএসএম