নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড বা কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা বিএনপি সমর্থন করে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নিজ বাসভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা আগেও এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে জানিয়েছি যে, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কোনো রাজনৈতিক দল বা তাদের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার পক্ষে আমরা নই। এ বিষয়ে আদালতকে সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই আদালতে যাওয়ার সুযোগ তৈরির জন্য আইন সংশোধন করেছি। সংবিধানে এ বিধান থাকলেও সংশ্লিষ্ট আইনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আগে করা হয়নি, পরে তা সংশোধন করা হয়েছে। বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি কোনো সিদ্ধান্ত আসে, তা নির্বাচন কমিশনের মান্য করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অন্য কোনো প্রক্রিয়ায়, বিশেষ করে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করা হলে তা হবে এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত।
সালাহউদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি যে ডামি বা ভুয়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে প্রায় ২৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। সংখ্যাটি কিছুটা কমবেশি হতে পারে, তবে আমি যতটুকু জানি তা-ই বলছি। সেক্ষেত্রে যদি নিষিদ্ধ করতেই হয়- স্বৈরাচারের দোসর বা ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে- তাহলে ওই ২৮টি দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বা দলকেই নিষিদ্ধ করতে হবে। প্রশ্ন হলো, তখন নির্বাচনটা কাদের নিয়ে হবে?
তিনি বলেন, এই দেশে যারা রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে চাচ্ছে, তারা যদি পরে বলে যে আমরাও নির্বাচন করব না! তাহলে কি এ দেশের নির্বাচন হবে? উদ্দেশ্য ভিন্ন হতে পারে তাদের এই দাবির পেছনে, নিজেদের অতিরিক্ত সুবিধা সৃষ্টির জন্য হয়তোবা তারা আরও অনেক রাজনৈতিক দলের নিষিদ্ধ কামনা করতে পারে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি আলাদা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী। তারা রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করার দায়েও জড়িত। সেই ফ্যাসিস্ট সরকারের শেষ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য মন্ত্রী, এমপি এবং জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে এবং আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে, যা চলমান এবং ভবিষ্যতেও চলবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার আমরা সর্বপ্রথম দাবি করেছিলাম। আদালত নির্ধারণ করবেন তারা (আওয়ামী লীগ) এ দেশে রাজনীতি করতে পারবে কি পারবে না, নির্বাচন করার অধিকার থাকবে কি থাকবে না। এই প্রক্রিয়ায় যদি আরও কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে, তা আদালতে উত্থাপন করা যেতে পারে বলেও জানান তিনি।