মিশরের পবিত্র তুর পর্বতে নির্মিত হতে যাচ্ছে বিলাসবহুল মেগা-রিসোর্ট। ‘দ্য গ্রেটেস্ট ট্রান্সফিগারেশন’ নামের এই প্রকল্পের আওতায় গড়ে উঠবে হোটেল, রিসোর্ট, ক্যাবল কার, শপিং কমপ্লেক্স ও অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রিক স্থাপনা।
স্থানীয়ভাবে জাবাল মুসা নামে পরিচিত এই পর্বতকে ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলমানেরা সমভাবে শ্রদ্ধা করে থাকেন। বাইবেল ও কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী এখানেই মুসা (আ.) দশ আদেশ লাভ করেছিলেন এবং জ্বলন্ত গুল্ম থেকে আল্লাহ তার সঙ্গে কথা বলেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। ষষ্ঠ শতকের সেন্ট ক্যাথরিন মঠও এখানেই অবস্থিত, যা ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী একটি।
মিশর সরকার বলছে, প্রকল্পটি পর্যটন বৃদ্ধি ও অর্থনীতি চাঙা করবে। দেশটির লক্ষ্য ২০২৮ সালের মধ্যে বছরে ৩ কোটি পর্যটক আকর্ষণ করা। এ উদ্যোগের মাধ্যমে সিনাই অঞ্চলকে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করা হবে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে, এই পরিকল্পনা ঘিরে দেশ-বিদেশে দেখা দিয়েছে তীব্র সমালোচনা ঝড়। ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত এ অঞ্চলকে ‘বিপন্ন ঐতিহ্য’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করারও হুঁশিয়ারি এসেছে।
অন্যদিকে, স্থানীয় জেবেলেয়া বেদুইন সম্প্রদায় অভিযোগ করেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তাদের বসতি, ক্যাম্প এমনকি কবরস্থান পর্যন্ত উচ্ছেদ করা হয়েছে। অনেক পরিবারই পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ বা বিকল্প আশ্রয়ের সুযোগ পাননি।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও এ প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। গ্রিস ও বিভিন্ন খ্রিস্টান সম্প্রদায় রাষ্ট্র ইতোমধ্যে আপত্তি জানিয়েছে এবং সেন্ট ক্যাথরিন মঠের ঐতিহাসিক মর্যাদা রক্ষার দাবি তুলেছে।
পর্যটন শিল্পে নতুন সম্ভাবনা তৈরির পাশাপাশি প্রকল্পটি এখন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ধর্মীয় পবিত্রতা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে গভীর বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
এমআরএম/জিকেএস