নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পলিথিনে মোড়ানো সাত টুকরো লাশের পরিচয় মিলেছে। পরকীয়া সম্পর্কের জেরে ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুমকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করা হয়। এরপর জবাই করেন প্রেমিকা রুমা আক্তার। সেই লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভরে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেন।
এ ঘটনায় পুলিশ অনুসন্ধান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি রুমা আক্তারকে (২৮) রাজধানীর কাফরুল-শেওড়াপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করে।
গ্রেপ্তার রুমা আক্তার ময়মনসিংহ গৌরীপুর থানার তারাকান্দা এলাকার নজর আলীর মেয়ে।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে রূপগঞ্জের পূর্বাচলে এক অজ্ঞাত লাশের সাত টুকরো উদ্ধার করা হয়। প্রথমে লাশের পরিচয় পাওয়া যায়নি। পরে গুলশান থানার একটি জিডির সূত্র ধরে লাশের পরিচয় জানতে পারি। হত্যাকাণ্ডের ভুক্তভোগী হলেন ফতুল্লার চাঁদ ডাইংয়ের মালিক শিল্পপতি জসিম উদ্দিন মাসুম। তিনি বিবাহিত এবং তার সন্তান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় রুমা আক্তারকে গ্রেফতারের পর তাকে নিয়ে অভিযান চালানো হয়। তার দেখানো স্থান থেকে একটি চাপাতি, হেকসো ব্লেড এবং ভুক্তভোগীর পরিহিত সাফারি, এক জোড়া জুতা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, অবৈধ প্রেমের সম্পর্কের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তার সঙ্গে শিল্পপতি মাসুমের অবৈধ সম্পর্ক ছিল বলেও জানান তিনি।
রুমার বরাতে তিনি আরও জানান, পাশাপাশি মাসুম অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিষয়টি জানতে পেরে রুমা রাগে-ক্ষোভে তাকে হত্যা করেন। গত ১০ নভেম্বর রাতে রাজধানীর শেওরাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মূলত সেখানে তারা একটি ভাড়া বাড়িতে একত্র হতেন। ঘটনার রাতে সেখানে গেলে প্রথমে মাসুমকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করেন রুমা। পরে চাপাতি দিয়ে জবাই করে লাশ সাত টুকরা করা হয়। সেই টুকরো অংশ প্রথমে পাঠাও গাড়িতে করে এবং পরে সিএনজি ভাড়া করে এগুলো বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেন।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় আরও দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তারা এ ঘটনায় জড়িত কি না, তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।
এর আগে ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুম গত ১০ নভেম্বর বিকেলে ৪টার দিকে গুলশান সার্কেল-২ ল্যান্ডভিউ থেকে নিখোঁজ হন। গত ১২ নভেম্বর গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে নিখোঁজ মাসুমের ছেলে ওবায়দুল ইসলাম শিবু।