কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত কেয়ারি সিন্দবাদ জাহাজটি যায়নি। কারণ হিসেবে পর্যাপ্ত যাত্রী না পাওয়ার কথা জানিয়েছে জাহাজ কর্তৃপক্ষ। তবে ১ ডিসেম্বর থেকে জাহাজটি সেন্ট মার্টিনে চলাচল করবে বলে জানিয়েছে তারা।
কেয়ারি সিন্দবাদ জাহাজের ব্যবস্থাপক মো. শাহ আলম বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন নৌরুটে চলাচলের জন্য অনুমোদন পাওয়া গেছে। তবে পর্যটক-সংকটের কারণে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও বলেন, কেয়ারি সিন্দবাদ জাহাজের যাত্রীধারণক্ষমতা ৩৫০ জন। কিন্তু গতকাল বুধবার রাত পর্যন্ত সেন্ট মার্টিন যেতে ইচ্ছুক পর্যটকের টিকিট বুকিং হয়েছে মাত্র কয়েকটি। এ কারণে জাহাজটি ছেড়ে যায়নি। তবে ১ ডিসেম্বর কক্সবাজার থেকে পর্যটক পরিবহন শুরু করা হবে।
এর আগে কেয়ারি জাহাজটি ২০০৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টেকনাফের দমদমিয়া জাহাজঘাট থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটক পরিবহন করত। এখন থেকে এটি কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট নতুন নৌরুটে সেন্ট মার্টিন যাবে।
বুধবার বিকেলে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক ও কক্সবাজার সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটননিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণে কমিটির প্রথম বৈঠক গত মঙ্গলবার কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বৈঠকে কমিটির সদস্যদের সঙ্গে পরিবেশসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনার পর জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট। তবে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্বীপে দুই হাজারের বেশি পর্যটক যাতায়াত করতে পারবেন না।
গত ১৯ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন নিয়ন্ত্রণে কমিটি গঠন এবং একই সঙ্গে সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ চলাচল নিয়ে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
কমিটির কর্মপরিধি
১. সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজে ওঠার আগে পর্যটকদের জাহাজ ছাড়ার জায়গা, অর্থাৎ এন্ট্রি পয়েন্টে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তৈরি করা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করে ট্রাভেল পাস নিতে হবে।
২. ট্রাভেল পাসধারী পর্যটকদের অনুমোদিত জাহাজে ভ্রমণ নিশ্চিত করবে কমিটি।
৩. পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজে নিষিদ্ধঘোষিত পলিথিন ব্যাগ ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের পণ্য পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিটি কঠোর থাকবে।
৪. পর্যটকরা সেন্টমার্টিন দ্বীপে পৌঁছার পর কোন হোটেলে থাকবেন, তা লিপিবদ্ধ করার পাশাপাশি রেজিস্টারে সংরক্ষণ করা হবে।
৫. জাহাজ ছাড়ার স্থানে (পয়েন্টে) ও সেন্ট মার্টিনের প্রবেশের স্থানে (এন্ট্রি পয়েন্ট) পর্যটকদের জন্য করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে।
৬. পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয় সার্বিক বিষয় ও যোগাযোগ সমন্বয় করবে।