পশ্চিমবঙ্গে খসড়া ভোটার তালিকায় বিভ্রাট, মুসলিম হয়ে গেলেন ব্রাহ্মণ

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) ঘিরে এমনিতেই উত্তাল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। কোথাও জীবীতদের মৃত বলা হয়েছে, কোথাও নামই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমন ঝামেলার মধ্যেই এবার নতুন অভিযোগ সামনে এলো। সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সেলিম ও তার ছেলে অতীশ আজিজের পদবী বদলে গেলো খসড়া ভোটার তালিকায়। মুসলিম পরিচয়ের বদলে তাদের নামে জুড়ে দেওয়া হল ‘ব্রাহ্মণ’ পদবী ‘অবস্থি’। ভোটার তালিকার এই ভয়ানক ভুল ঘিরে নির্বাচন কমিশনের (ইসিআই) ভূমিকা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন উঠেছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় দেখা যাচ্ছে, অতীশ আজিজের ‘শেষ নাম’ হিসেবে বাংলায় লেখা রয়েছে ‘অবস্থি’। শুধু তাই নয়, বাবার নামের পাশে আত্মীয়ের তথ্যেও একই পদবী বসানো হয়েছে। অর্থাৎ, মহম্মদ সেলিমের নামের সঙ্গেও জুড়ে দেওয়া হয়েছে ‘অবস্থি’। বিষয়টি সামনে আসতেই ফেসবুকে পোস্ট করে ক্ষোভ উগরে দেন অতীশ। তিনি লেখেন, নির্বাচন কমিশন আমাকে ব্রাহ্মণ বানিয়ে দিয়েছে, আর আমার বাবাকেও। সঙ্গে ভোটার তথ্যের ছবিও পোস্ট করেন তিনি। এটিকে নিছক টাইপিংয়ের ভুল মানতে নারাজ সিপিআইএম নেতৃত্ব। অতীশ আজিজ এক সংবাদসংস্থাকে জানান, তার বাবা

পশ্চিমবঙ্গে খসড়া ভোটার তালিকায় বিভ্রাট, মুসলিম হয়ে গেলেন ব্রাহ্মণ

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) ঘিরে এমনিতেই উত্তাল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। কোথাও জীবীতদের মৃত বলা হয়েছে, কোথাও নামই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমন ঝামেলার মধ্যেই এবার নতুন অভিযোগ সামনে এলো।

সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সেলিম ও তার ছেলে অতীশ আজিজের পদবী বদলে গেলো খসড়া ভোটার তালিকায়। মুসলিম পরিচয়ের বদলে তাদের নামে জুড়ে দেওয়া হল ‘ব্রাহ্মণ’ পদবী ‘অবস্থি’। ভোটার তালিকার এই ভয়ানক ভুল ঘিরে নির্বাচন কমিশনের (ইসিআই) ভূমিকা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন উঠেছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় দেখা যাচ্ছে, অতীশ আজিজের ‘শেষ নাম’ হিসেবে বাংলায় লেখা রয়েছে ‘অবস্থি’। শুধু তাই নয়, বাবার নামের পাশে আত্মীয়ের তথ্যেও একই পদবী বসানো হয়েছে। অর্থাৎ, মহম্মদ সেলিমের নামের সঙ্গেও জুড়ে দেওয়া হয়েছে ‘অবস্থি’। বিষয়টি সামনে আসতেই ফেসবুকে পোস্ট করে ক্ষোভ উগরে দেন অতীশ। তিনি লেখেন, নির্বাচন কমিশন আমাকে ব্রাহ্মণ বানিয়ে দিয়েছে, আর আমার বাবাকেও। সঙ্গে ভোটার তথ্যের ছবিও পোস্ট করেন তিনি।

এটিকে নিছক টাইপিংয়ের ভুল মানতে নারাজ সিপিআইএম নেতৃত্ব। অতীশ আজিজ এক সংবাদসংস্থাকে জানান, তার বাবা কয়েক দশক ধরে রাজনীতিতে সক্রিয়। এমন পরিচিত মুখের ক্ষেত্রেই যদি এই ধরনের ভুল হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের ভোটার তালিকায় কী অবস্থা হয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। তার কথায়, এটা শুধু ব্যক্তিগত ভুল নয়, গোটা প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।

এই সুযোগে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়িয়েছেন মোহাম্মদ সেলিম নিজেও। এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ভোটার তালিকার মতো গুরুতর একটি প্রক্রিয়াকে কমিশন অত্যন্ত হালকাভাবে নিয়েছে। পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়াই ও কর্মীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ না দিয়েই এসআইআর চালানো হয়েছে। প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার এই গোটা প্রক্রিয়াকে কার্যত ‘প্রহসনে’ পরিণত করেছেন।

এদিকে, নির্বাচন কমিশন এই বিতর্ককে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না। রাজ্যের প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তার সূত্রে দাবি করা হয়েছে, খসড়া তালিকায় এ ধরনের ভুল থাকতেই পারে। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে, অর্থাৎ আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সব সংশোধন করে নেওয়া হবে। অতীশ আজিজও জানিয়েছেন, তিনি সিপিআইএমের বুথ লেভেল এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে নাম সংশোধনের আবেদন করবেন।

উল্লেখ্য, এই বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর প্রক্রিয়ার পরই মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই তালিকা অনুযায়ী, রাজ্যে মোট ৫৮ লাখ ভোটারের নাম বাদ পড়েছে। এর মধ্যে ২৪ লাখ ভোটারকে ‘মৃত’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, ১৯ লাখকে ‘স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত’ ও ১২ লাখ ভোটারকে ‘নিখোঁজ’ দেখিয়েছে কমিশন। এই বিপুলসংখ্যক নাম বাদ পড়া নিয়ে এমনিতেই বিরোধীদের তোপের মুখে তারা।

তার ওপর মোহাম্মদ সেলিমের মতো শীর্ষ নেতার নাম-পরিচয়ে এই ধরনের ভুল নতুন করে সন্দেহ আরও জটিল করছে। ভোটের আগে ভোটার তালিকার নির্ভুলতা নিয়েই যখন সবচেয়ে বেশি ভরসার দরকার, তখন এমন ভুল কমিশনের অস্বস্তি আরও বাড়াল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

ডিডি/এসএএইচ

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow