শিক্ষকের পাঠদান বুঝতে পারে না শিক্ষার্থীরা। এজন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষককে পরিবর্তনের দাবি ওঠে। এজন্য ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের পেটান শিক্ষক। আহত চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা এ ঘটনার খোঁজ নিতে গেলে শিক্ষকদের উস্কানিতে তাদের ওপর হামলা করে কিছু শিক্ষার্থী। তারা হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে কয়েকজন সাংবাদিককে গুরুতর আহত করে।
আহতরা হলেন রুপালী বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিনিধি রাকিবুল ইসলাম, একাত্তর টিভির ফটোগ্রাফার হাফিজুর রহমান, প্রাইম টিভির সাকের আহমেদ ও অভিভাবক ওমেদ আলী।
স্থানীয়রা জানান, জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুন্না সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ক্লাস নেন। শিক্ষার্থীরা তার পাঠদান স্পষ্টভাবে বুঝতে না পেরে প্রধান শিক্ষকের কাছে তাকে পরিবর্তনের আবেদন করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ৪১ শিক্ষার্থীকে উপর্যপুরি বেত্রাঘাত করেন মুন্না। পরে আহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয়রা বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষকের কাছে বিচার দাবি করেন।
খবর পেয়ে ছুটে আসেন সাংবাদিকরা। এসময় অন্তত তিনজন শিক্ষক সাধারণ শিক্ষার্থীদের উস্কানি দিলে পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। শতাধিক ছাত্র লাঠিসোঁটা, হাতুড়ি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সাংবাদিকদের গাড়িচালক ইকবাল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর জখম হন। এদের মধ্যে রাকিবকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে এলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবায়দুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। একইসঙ্গে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করেন তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিক নূরে আলম, ঘটনায় জড়িত শিক্ষক মুন্নাকে বিদ্যালয় থেকে স্থায়ী এবং সাংবাদিকদের হামলায় উস্কানির অভিযোগে আরও তিনজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক তানভীর হোসেন মুন্না পলাতক রয়েছেন। যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নাজমুল হুদা/এসআর/এমএস