পানি উঠছে না টিউবওয়েলে, ভোগান্তিতে ৬৫ পরিবার

নড়াইলের একটি গ্রামে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। টিউবওয়েলে পানি ওঠা বন্ধ হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পানির অভাবে সংসারের কাজকর্মসহ নানান অসুবিধায় পড়েছেন ওই এলাকার মানুষ।

নাওরা নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম। সরেজমিনে এ গ্রামে দেখা যায়, টিউবওয়েল থেকে কোনো পানি উঠছে না। কোনো কোনো টিউবওয়েল থেকে ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে পানি উঠছে না। এর আগে কখনো এমন পরিস্থিতি হয়নি এ গ্রামে। এ বছর রমজান মাসের মাঝামাঝি থেকে এ সমস্যা তীব্র হতে শুরু করে। এছাড়াও আশপাশের কয়েকটি গ্রামেরও পানি সংকটের খবর পাওয়া গেছে।

গ্রামের মুরব্বি আবুবক্কর মোল্যা বলেন, ১৫ দিন ধরে কোনো টিউবওয়েল দিয়ে পানি উঠছে না। এখন মাঠের ইরি ব্লকের স্যালো মেশিন থেকে পানি এনে খাবার ও সংসারের কাজকর্ম সারছে সবাই। চরম অসুবিধার মধ্যে আছি আমরা।

একই গ্রামের কৃষক ইদ্রিস বলেন, এতো পানির সমস্যা এর আগে কখনও হয়নি। এবার খুব বেশি হইছে। কোনো বাড়ির টিউবওয়েল থেকে পানি উঠতেছে না। এ গ্রামে যে কয়টি পুকুর আছে তাতেও ব্যবহার করার মতো পানি নেই। সবাই মাঠে ব্লকের স্যালো মেশিনের পানি এনে বাড়ির কাজকাম করছেন।

ছোট্ট এ গ্রামটিতে ৬০-৬৫টি পরিবারের বসবাস। কৃষিনির্ভর এ গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪০০ শত। ৬৫টির মতো হ্যান্ড টিউবওয়েল, ছোট-বড় প্রায় ১৫টি পুকুর ও দুটি মসজিদ রয়েছে এ গ্রামে।

পরিবেশবাদীরা মনের করেন, কৃত্রিম সৃজন, প্রকৃতির সৃজনকে ধ্বংস করা, পরিবেশ নষ্ট করে অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র বিভিন্ন স্থাপনা করা, ভূ-গর্ভস্থ থেকে অতিরিক্ত পানি আহরণ করা, সারফেস ওয়াটার ব্যবহার ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা না রাখার জন্য আজ এ ধরনের চরম সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, নড়াইল সদরের উত্তরাঞ্চল ও লোহাগড়ার পশ্চিম এলাকায় সুপেয় পানির স্তর প্রতিবছর ১০-১১ ফুট নিচে নামছে। বিগত কয়েক বছর আগেও এ এলাকায় ১৫৯-১৭০ ফুটের মধ্যে ভূ-গর্ভস্থ সুপেয় পানির স্তর পাওয়া যেত। অথচ এখন পানির জন্য যেতে হয় ৪-৫ ফুটেরও বেশি গভীরে।

হাফিজুল নিলু/আরএইচ/জেআইএম