পানি বাড়তেই ব্রহ্মপুত্রে ভাঙন শুরু, বিলীন হচ্ছে ঘর-বাড়ি

3 months ago 69

গাইবান্ধার ফুলছড়িতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি ও বেশ কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক ভাঙনের ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ কয়েকটি সামাজিক অবকাঠামো ঝুঁকির মুখে পড়েছে। প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ায় এ ভাঙন দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভাঙনে বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না।

জানা গেছে, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ফুলছড়ি উপজেলার সাত ইউনিয়নেই বন্যা ও নদীভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনে সর্বহারা হয় নদী পাড়ের মানুষগুলো। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হয় তাদের। প্রতি বছরের মতো এবারও ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধির কারণে ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর উড়িয়া থেকে কটিয়ারভিটা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের ফলে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বাড়ি-ঘর, গাছপালা ও আবাদি জমি। সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে উড়িয়া ইউনিয়নের কটিয়ারভিটা, উত্তর উড়িয়া, কালাসোনা, জোড়াবাড়ি ও কাবিলপুর গ্রামে। এছাড়াও ফুলছড়ি, ফজলুপুর ও এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে উড়িয়া ইউনিয়নের কটিয়ারভিটা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এ এলাকায় ভাঙনের গতি বেড়েই চলেছে। বাড়ি-ঘর, গাছ কেটে এলাকা ছাড়ছেন নদী পাড়ের মানুষ। এলাকার ভাঙন রোধের কাজ শুরু না হওয়ায় চরম আতঙ্কে কাটছে প্রতিটা মুহূর্ত। হুমকির মুখে পড়েছে কটিয়ারভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর উড়িয়া কমিউনিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ কাবিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দাড়িয়ারভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া কয়েকটি মসজিদ, মন্দির, কবরস্থানসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক অবকাঠামো ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।

ভাঙনের শিকার এলাকাবাসীর অভিযোগ, ব্যাপকভাবে নদী ভাঙন দেখা দিলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড বা স্থানীয় প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এখনই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ব্যাপক ক্ষতিতে পড়তে হবে নদী পাড়ের মানুষদের।

কটিয়ারভিটা গ্রামের বিন্দু রাণী বলেন, গত সাত দিনের ভাঙনে এই এলাকার ১০টি পরিবার বসতভিটা হারিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। নদীভাঙন রোধে এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এ বছর আমাদের বাড়িঘরও থাকবে না।

নুরুল ইসলাম বলেন, বন্যা এলেই এই এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দুশ্চিন্তাও বেড়ে যায়। আমাদের দুঃখে কেউ খোঁজ নিতে আসে না।

কটিয়ারভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লিপি রাণী বলেন, ভাঙন এলাকা থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব ৫০ মিটার। বিদ্যালয় চলাকালীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। ভাঙনরোধে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে দ্রুতই বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ভাঙন এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। উত্তর উড়িয়া থেকে কটিয়ারভিটা পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা রক্ষায় বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। বরাদ্দ পেলে ভাঙনরোধে কাজ শুরু করা হবে।

এফএ/এমএস

Read Entire Article