পানি সংকটের কারণে পাক-ভারত যুদ্ধবিরতি হুমকির মুখে

3 months ago 34

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার সম্প্রতি সতর্ক করেছেন যে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আসন্ন আলোচনায় পানি সমস্যা সমাধান না হলে দুই দেশের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি হুমকির মুখে পড়তে পারে। 

তিনি আরও বলেন, পানি সমস্যার সমাধানে ব্যর্থতা ‘একটি যুদ্ধ ঘোষণা করার সমান’ হবে।

মঙ্গলবার (১৩ মে) সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাক-ভারত যুদ্ধবিরতি নিয়ে এই মন্তব্য করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।

সাক্ষাৎকারে  তিনি বলেন, যদি দুই দেশের মধ্যে পানি সংকটের সমাধান না হয়, তা হলে এই অবস্থা যুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এটি এক ধরনের যুদ্ধ ঘোষণার মতো হবে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবরটি প্রকাশ করেছে।

সাক্ষাৎকারে পানি সংকটের পাশাপাশি, দার ভারতীয় সীমান্তে গত ৭ মে ভারতীয় বাহিনীর বিনা উসকানিতে চালানো আক্রমণের ব্যাপারেও মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, পাকিস্তান কোনোভাবেই ভারতের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ইচ্ছা রাখে না। তার ভাষায়, ইসলামাবাদ কেবল আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা হামলা চালিয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের সাম্প্রতিক একতরফা চুক্তি স্থগিতের ফলে যুদ্ধবিরতি হুমকির মুখে পড়েছে। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ভারতকে এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে, এটি যুদ্ধ ঘোষণার সমতুল্য হবে।

পানি সমস্যার পাশাপাশি দার ভারতের সামরিক অভিযানের ব্যাপারেও মন্তব্য করেছেন। তিনি ভারতীয় সামরিক অভিযানকে ‘একটি যুদ্ধ’ এবং ‘কাশ্মীর অঞ্চলে ভারতের আধিপত্য কায়েমের একটি কল্পনাপ্রসূত চেষ্টা’ বলে অভিহিত করেন। তবে, তিনি সাফ জানিয়ে দেন, পারমাণবিক বিকল্প কখনোই আলোচনার টেবিলে ছিল না।

তিনি আরও বলেন, এমন সময় আসে যখন আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমরা জানি আমাদের সামরিক শক্তি যথেষ্ট শক্তিশালী, আমরা তাদের পরাজিত করতে পারব।

বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে, তবে দার সতর্ক করেছেন যে, পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা এখনো শুরু হয়নি। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, ভারতের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং তারা আলোচনা শুরু করবে।

দার কাশ্মীরকে ‘এই অঞ্চলের অস্থিরতার মূল কারণ’ হিসেবে উল্লেখ করে কাশ্মীরের ভবিষ্যতের আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবি জানান। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের সব রূপ ও প্রকাশের নিন্দা জানায় এবং পেহেলগাম হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনো সম্পর্ক থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রশংসা করে দার বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেন। যদি তারা আমাদের প্রচেষ্টায় বিশ্বাস না করত, তাহলে তারা যেভাবে সহযোগিতা করেছেন, তা করতেন না।

এছাড়া, দার যোগ করেন, ভারতীয়রা আকাশে যা দেখেছে, তা তারা ভুলবে না। তারা জানে যে, ক্ষয়ক্ষতি কতটা ভয়াবহ ছিল। পাকিস্তান এবং ভারত উভয় দেশই কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন এবং এ সমস্যার সমাধান না হলে দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।

Read Entire Article