পার্শ্ববর্তী দেশে নিজ নাগরিকদের ওপরেই বিমান হামলা

3 months ago 7

মিয়ানমারে নিজ দেশের মানুষের ওপরেই বিমান হামলা চালাচ্ছে দেশটির জান্তা সরকার। সোমবার সাগাইন অঞ্চলে বাচ্চাদের একটি স্কুলে বিমান হামলায় ২০ শিশুসহ অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। মিয়ানমারে সাম্প্রতিক ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ঘোষিত মানবিক যুদ্ধবিরতির মধ্যেই এ হামলা চালাল জান্তা বাহিনী। 

স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ২৮ মার্চের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত থেইন কুইন গ্রামের একটি স্কুলে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় এ হামলা চালানো হয়।

জানা গেছে, হামলার সময় শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে অবস্থান করছিল। এক প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছিলাম শিশুদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে, কিন্তু যুদ্ধবিমানটি খুব দ্রুত বোমা নিক্ষেপ করে।’ তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে ২০ শিশু এবং দুজন শিক্ষক রয়েছেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলায় স্কুল ভবনটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ধাতব ছাদ ছিন্নভিন্ন হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে, আর ইটের দেয়ালগুলো ভেঙে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। স্কুলের সামনে একটি খুঁটির পাশে ছড়িয়ে আছে শিশুদের ব্যবহার করা এক ডজনেরও বেশি স্কুলব্যাগ।

হামলার খবর প্রকাশ্যে আসার পর জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ হামলার ঘটনায় তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। স্কুলগুলো শিশুদের জন্য নিরাপদ স্থান হওয়া উচিত, বোমার লক্ষ্য নয়।’

মিয়ানমার সেনা সরকার অবশ্য হামলার খবর অস্বীকার করে জানিয়েছে, ‘বেসামরিক স্থাপনায় কোনো বিমান হামলা চালানো হয়নি, এই প্রতিবেদন ভিত্তিহীন।’ 

উল্লেখ্য, ২৮ মার্চের ৭.৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দেশ পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল। তবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণার মধ্যেও দেশে সংঘাত অব্যাহত রয়েছে।

২০২১ সালে সেনাবাহিনীর হাতে নির্বাচিত বেসামরিক সরকার অপসারিত হওয়ার পর থেকে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ চলছে। জান্তা বাহিনী ও বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই এখনো থামেনি।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২৪৩টি সামরিক হামলার মধ্যে ১৭১টি বিমান হামলা অন্তর্ভুক্ত ছিল, যাতে দুইশর বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। 

Read Entire Article