পার্বত্যাঞ্চলে গ্যাস অনুসন্ধানের জোরালো উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। দেশে স্থলভাগের জন্য প্রায় তিন দশক আগে করা উৎপাদন বণ্টন চুক্তি বা প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট (পিএসসি) সংশোধনের মাধ্যমে এই উদ্যোগ নিয়েছে পেট্রোবাংলা।
পিএসসির খসড়া চূড়ান্ত করতে ডিসেম্বরের মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে পিএসসি চূড়ান্ত হলে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের মধ্য দিয়ে পেট্রোবাংলা বড় আকারে গ্যাসের অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করবে। পার্বত্যাঞ্চলে গ্যাস ব্লক ২২বি-তে প্রথম অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে প্রেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে।
১৯৯৭ সালের পর আর অনশোর গ্যাসের উৎপাদন বণ্টন চুক্তির নতুন করে হালনাগাদ করা হয়নি। বিদ্যমান পিএসসিতে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করার মতো তেমন কোনো লোভনীয় প্রস্তাব ছিল না। যে কারণে খসড়া প্রস্তাবে বেশকিছু সংশোধন এনেছে পেট্রোবাংলা।
স্থলভাগে বা অনশোর ব্লক ২২বি অঞ্চলের আওতায় রয়েছে বান্দরবানের থানচি, রুমা, আলীকদম ও কক্সবাজারের চকরিয়া। এছাড়া আনোয়ারা ও কাপ্তাইয়ের কিছু অংশও পড়েছে। অনুসন্ধানে এই অঞ্চলে গ্যাস পাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত এই ব্লকটির সীমান্ত এলাকায় কূপ খনন করে বিপুল পরিমাণ গ্যাসের মজুত পেয়েছে।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য মূলত অনাবিষ্কৃত অঞ্চলে গ্যাস সন্ধানে জোর তৎপরতা চালানো। সে লক্ষ্য থেকেই পার্বত্য অঞ্চলের ব্লক ২২বি-তে প্রথম কাজ করা হবে। আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে যাবতীয় কার্যক্রম শেষে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার জাগো নিউজকে বলেন, পাহাড় কোনো ফোকাস নয়। আমরা অনশোরে আরেকটা পিএসসি করতে যাচ্ছি। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হলো পার্বত্য এলাকা। তবে পার্বত্য এলাকার বাইরেও আছে। আমরা ড্রাফট করেছি, এটাকে আরও সংশোধন করবো। সবার সঙ্গে কনসাল্ট করবো তখন আমরা ওপেন (প্রকাশ) করবো যে কোন কোন এলাকায় কাজ করবো।
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোভিত্তিক কনসালট্যান্সি ফার্ম গুস্তাভসন অ্যাসোসিয়েটস ২০১১ সালে বাংলাদেশের গ্যাসের মজুত নিয়ে এক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। ওই প্রতিবেদনে স্থলভাগে অনাবিষ্কৃত গ্যাস অঞ্চলগুলো তুলে ধরা হয়। পাহাড়ী এলাকা বিশেষত বান্দরবানের বরকল, বেলাছড়ি, চাংগুতাং, গিলাছড়ি, গোবামুরা, কাসালাং, মাতামুহুরী, সিসাক ও উত্তাংছত্র এলাকায় গ্যাস পাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে তথ্য প্রকাশ করা হয়।
এনএস/এমআইএইচএস/জিকেএস