‘দল তো পেলাম, খেলতে পারবো তো!’ ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের মনে এখন এই কথাগুলোই ঘুর-পাক খাচ্ছে। কোন প্রসঙ্গ আর, পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলা অনিশ্চিয়তা নিয়েই ইংলিশ ক্রিকেটারদের এমন ভাবনা।
গতকাল সোমবার লাহোরে পিএসএলের ১০ম আসরের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তান ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্টটির আগামী আসরে দল পেয়েছেন টম কহলার (পেশওয়ার জালমি), স্যাম বিলিংস ও টম কারেন (লাহোর কালান্দার্স)।
রিটেইন করা ক্রিকেটার হলেন জেমস ভিন্স (করাচি কিংস), ক্রিস জর্ডান ও ডেভিড উইলি (মুলতান সুলতানস)।
এসব ক্রিকেটদের মধ্যে মাত্র দুই জন (কহলার ও ভিন্স) নিজেদের খেলা নিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) তাদেরকে ছাড়পত্র (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বা এনওসি) দিয়েছে। বাকিদের কারো ছাড়পত্র এখনো অন্ধকারে। শেষ পর্যন্ত তারা পিএসএলে খেলতে পারবেন কিনা, তা এখনো অনিশ্চিত।
ক্রিকেট-বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ক্রিকইনফো’ জানতে পেরেছে, ইসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ৬ ক্রিকেটার পিএসএলে নিবন্ধন করেছিলেন। গত রোববার এই ৬ জনসহ নিবন্ধন করা অন্যান্য ইংলিশদের বড় একটি তালিকা পিএসএল পরিচালনা পরিষদের কাছে পাঠিয়েছে ইসিবি। সংস্থাটি জানিয়ে দিয়েছে, এসব ক্রিকেটারদের পিএসএলে পাওয়া যাবে না।
সোজা বাংলায় বললে, তালিকায় থাকা ক্রিকেটাররা এনওসি পাবেন না। এ তালিকায় আছেন সর্বশেষ গত জুনে ইংল্যান্ড দলে খেলা ব্যাটার জনি বেয়ারেস্টো ও স্পিনার আদিল রশিদের মতো তারকা।
কেন আসলে পিএসএলে খেলতে এমন বিড়ম্বনায় পড়েছেন ক্রিকেটাররা? এই নৈপথ্যে কারণ কী?
গেল নভেম্বরে ক্রিকেটারদের এনওসি নিয়ে নতুন নিয়ম জারি করে ইসিবি। তখন সংস্থাটির পক্ষে বলা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া টুর্নামেন্ট চলাকালীন কোনো ক্রিকেটার বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলতে পারবেন না। যেকোনো ফরম্যাটের জন্যই যা কার্যকর।
এই সিদ্ধান্তের পর ইসিবির ওপর চাপ প্রয়োগ করেন ক্রিকেটার ও ক্রিকেটারদের সংগঠন পেশাদার ক্রিকেটার অ্যাসোসিয়েশন (পিসিএ)। চাপের মুখে কিছুটা শিথিল হয় ইসিবি। তারা জানায়, পরিস্থিতি-প্রেক্ষাপট বুঝে আলোচনা সাপেক্ষে ক্রিকেটারদের এনওসি দেওয়া হবে।
নভেম্বরে ইসিবির সংশোধিত সিদ্ধান্ত অনুসারে, আলোচনা সাপেক্ষে পিএসএলে খেলার ছাড়পত্র পাওয়ার কথা ক্রিকেটারদের। কিন্তু গত রোববার পিএসএলে পাওয়া যাবে না, এমন মর্মে প্রকাশিত তালিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর ক্রিকেটারদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে।
পিসিএ জানিয়েছে, বিষয়টি সমাধানের জন্য ক্রিকেটার, আইন কর্মকর্তাদের নিয়ে ইসিবির সঙ্গে বৈঠকে বসবে তারা।
পিসিএ-এর এক মুখপাত্র বলেন, ‘এনওসি নীতি ঘোষণা ও প্রস্তাবিত বিধি বাস্তবায়নের পর পিসিএ সদস্য, আইনি দল ও ইসিবির সঙ্গে আলোচনায় হয়েছে। সম্মিলিতভাবে বর্তমান খেলোয়াড়দের প্রতিনিধিরা সেখানে সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখনো আলোচনা চলমান।’
উল্লেখ্য, আগামী ১০ এপ্রিল থেকে ২৫ মে পর্যন্ত চলবে পিএসএলের ১০ম আসর। আইপিএলের সঙ্গে পাল্লা দিতে একই সময়ে পিএসএল (২১ মার্চ থেকে ২৫ মে) আয়োজন করছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
এমএইচ/এমএস