ভাগ্য নির্ধারণে বিরাট বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান। আগামী ২৪ নভেম্বর দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে তাদের এ কর্মসূচি ঠেকাতে প্রস্তুত রয়েছে ১০ হাজার পুলিশ।
বুধবার (২০ নভেম্বর) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিটিআইর বিক্ষোভের কয়েক দিন আগেই রাজধানী ইসলামাবাদ ও পাঞ্জাবে কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানীতে শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকার।
পাঞ্জাবের পুলিশ প্রধানের নির্দেশে অ্যাডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেল (অপারেশনস) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পাঞ্জাবের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ১০ হাজার ৭০০ জনের বেশি পুলিশ সদস্যকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, প্রস্তুত থাকা দলের মধ্যে সাড়ে তিন হাজার পাঞ্জাব হাইওয়ে পেট্রোলের (পিএইচপি) সদস্য, এক হাজার স্পেশাল প্রোটেকশন ইউনিটের সদস্য এবং এক হাজার ২০০ জন প্রশিক্ষণ পরিচালকের কর্মী রয়েছেন।
পাঞ্জাব পুলিশের এই পদক্ষেপ মূলত পিটিআইর ২৪ নভেম্বর দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাকে নেওয়া হয়েছে। এদিন ইসলামাবাদ অভিমুখে মার্চ করতে নিজের সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইমরান খান। তিনি বলেছেন, বিক্ষোভে দলের পুরো নেতৃত্ব সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে।
কেবল পুলিশ প্রস্তুত নয়, বাহিনীর টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া সব কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আট হাজার অতিরিক্ত কর্মী চেয়েছে ইসলামাবাদ। আগামী ২১ তারিখের মধ্যে তারা রাজধানীতে পৌঁছাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, আগামী ২৪ নভেম্বর ভাগ্য নির্ধারণে বিরাট বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন ইমরান খান। তার এ বিক্ষোভের এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে রাজধানী ইসলামাবাদে দুই মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
কোনো এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হলে সেখানে চার বা তার চেয়ে বেশি লোকের সমাগম সীমিত করা হয়। ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারির ফলে এ সময়ে চারজন বা তার অধিক লোক একসঙ্গে হতে পারবেন না।
পুলিশ জানিয়েছে, এর আগে গত সপ্তাহে ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলের বাইরে থেকে পিটিআইর বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। পরে অবশ্য তাদের সতর্কতা জারি করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে আগামী ২৪ নভেম্বর দেশব্যাপী চূড়ান্ত বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন ইমরান খান। নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট চুরি, অন্যায়ভাবে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এবং ২৬তম সংশোধনী পাসের প্রতিবাদে এ কর্মসূচির ডাক দেন তিনি।
ইসলামাবাদের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উসমান আশরাফের কার্যালয়ের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সমাজের এক শ্রেণির লোক বেআইনি সমাবেশের আয়োজন করতে চলেছে। যার ফলে জনগণের শান্তি ও শৃঙ্খলা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
ডনের কাছে আসা এ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, রাজধানীতে পাঁচ বা ততোধিক লোকের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেননা এ সমাবেশ জনসাধারণের শান্তি ও শৃঙ্খলাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে এবং জনসাধারণের জন্য বিরক্তি বা আঘাতের কারণ হতে পারে ও মানুষের জীবন এবং নিরাপত্তাকে বিপন্ন করতে পারে। এছাড়া এর ফলে জনসাধারণের সম্পত্তির জন্য হুমকি ও জেলার রাজস্ব/আঞ্চলিক সীমার মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাসহ সহিংসতা দেখা দিতে পারে।
এর আগে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী ২৪ নভেম্বর বড় বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন ইমরান খান। এ বিক্ষোভকে সামনে রেখে নেতাকর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। বলা হচ্ছে, পিটিআইর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে এ সমাবেশ।