স্তন ক্যানসার শুনলেই সাধারণত নারীদের রোগ বলেই ধরা হয়। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, পুরুষেরও স্তন ক্যানসার হতে পারে।
তুলনামূলকভাবে বিরল হলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতি একশো জন স্তন ক্যানসার রোগীর মধ্যে একজন পুরুষ। বাংলাদেশেও এমন বেশ কিছু কেস আছে, কিন্তু এসব ক্ষেত্রে দেরিতে শনাক্ত হওয়ায় চিকিৎসা জটিল হয়ে পড়ে।
পুরুষের কেন স্তন ক্যানসার হয়
পুরুষদের শরীরেও অল্প পরিমাণে স্তন টিস্যু বা ব্রেস্ট টিস্যু থাকে। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে বা জেনেটিক কারণে এই টিস্যুতে ক্যানসার কোষ তৈরি হতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত মদ্যপান, স্থূলতা, লিভারের সমস্যা, রেডিয়েশন এক্সপোজার এবং বিআরসিএ২ জিনে মিউটেশন থাকলে পুরুষের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।
কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন
প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যথা না থাকলেও শরীরে এই পরিবর্তনগুলো দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন-
>> স্তনের নিচে বা চারপাশে ছোট শক্ত গাঁট
>> নিপল বা তার আশপাশে চুলকানি, লালচে দাগ বা ভেতরে ঢুকে যাওয়া
>> নিপল থেকে রক্ত বা অস্বাভাবিক তরল নিঃসরণ
>> স্তনের ত্বকে ভাঁজ বা দাগ পড়া
এই উপসর্গগুলো দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
চিকিৎসা ও প্রতিরোধ
পুরুষের স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা নারী রোগীদের মতোই — অপারেশন, কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন বা হরমোন থেরাপির মাধ্যমে করা হয়। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে চিকিৎসায় সফলতার হার অনেক বেশি।
তাই প্রতিরোধে প্রয়োজন নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা, ওজন নিয়ন্ত্রণ, মদ্যপান ও ধূমপান থেকে বিরত থাকা এবং পারিবারিক ইতিহাস থাকলে সময়মতো স্ক্রিনিং করা।
পুরুষের স্তন ক্যানসার এখনো অনেকের কাছেই অজানা একটি বিষয়। ফলে লজ্জা বা অবহেলায় অনেকে দেরি করে চিকিৎসা নেন। কারণ সময়মতো সনাক্ত করা গেলে এটি পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য রোগ। নিজের শরীর সম্পর্কে সচেতন থাকাই সবচেয়ে বড় সুরক্ষা।
সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি, ন্যাশনাল ব্রেস্ট ক্যানসার ফাউন্ডেশন
এএমপি/এমএস