প্যারিস অলিম্পিকে দেশ পরিচয়হীন ৩৭ উদ্বাস্তু

1 month ago 10

বিশাল এই পৃথিবীতে তাদের দেশ থেকেও নেই। নেই কোনো দেশের পরিচয়। নেই কোনো পতাকা। তাদের একটিমাত্র পরিচয়, উদ্বাস্তু। ২০১৬ সালে প্রথম রিও অলিম্পিকে উদ্বাস্তুদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়। ধারাবাহিকতা ছিল টোকিও অলিম্পিকেও। এবার প্যারিস অলিম্পিকও সে ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে।

দেশ পরিচয় এবং জাতীয় পতাকাছাড়া মোট ৩৭জন উদ্বাস্তু অংশ নিতে যাচ্ছেন এবারের প্যারিস অলিম্পিকে। ১২টি ভিন্ন ভিন্ন ডিসিপ্লিনে পদকের লড়াই করবেন এই ৩৭জন প্রতিযোগী।

দেশ কিংবা জাতীয় পতাকা না থাকলেও এই উদ্বাস্তু দলের কিন্তু পরিচয়বাহী একটি পতাকা থাকবে প্যারিসের অলিম্পিক প্যারেডে। যে পতাকা দিয়ে তাদেরকে আলাদাভাবে চেনা যাবে। উদ্বাস্তু দলের পতাকাবাহক হবেন সিন্ডি গাম্বা।

এই অ্যাথলেটের জন্ম হয়েছিল ক্যামেরুনে। কিন্তু এখন তিনি উদ্বাস্তু। শুক্রবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বাস্তু দলের হয়ে পতাকা বইবেন তিনি। গাম্বা বলেন, ‘আমরা সব উদ্বাস্তু একটাই দল। আমরা খেলোয়াড়। সে সঙ্গে যোদ্ধা। আমরা সবাই ক্ষুধার্ত খেলোয়াড়। সবাই একটা পরিবার। আমাদের উদ্বাস্তু হিসাবে দেখা হয়; কিন্তু সব কিছুর ওপর আমরা খেলোয়াড়। অন্য দেশের খেলোয়াড়দের মতো আমরাও জিততে এসেছি। পদক জয়ের খিদে আমাদেরও আছে।’

২০১৫ সালে প্রথমবার ভাবা হয় উদ্বাস্তুদের অলিম্পিকে নেওয়ার বিষয়ে। যে কারণে ২০১৬ সালে ব্রাজিলের রিও অলিম্পিকে এ ভাবনা কার্যকর করা হয়। সেবার ১০ জন অ্যাথলেট উদ্বাস্তু হিসাবে অংশ নিয়েছিলেন। এবারে ৩৭ জন অ্যাথলেট অংশ নেবেন সাঁতার, কুস্তির মতো বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে।

এবারের অলিম্পিকে রয়েছে ব্রেকিং। এই খেলায় অংশ নেবেন মানিঝা তালাস। ২১ বছরের তরুণী রাস্তায় একজনকে নাচতে দেখে অনুপ্রাণিত হন। তার জন্ম কাবুলে। কিন্তু ২০২১ সাল থেকে আফগানিস্তানের শাসক তালিবান। সে দেশে তার পক্ষে থাকা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তিনি স্পেনে চলে যান উদ্বাস্তু হিসাবে।

উদ্বাস্তু হিসাবে তায়কোয়ান্দোতে নামবেন ফারজাদ মানসৌরি। তিনি ব্রেকিংকে দেখেন যন্ত্রণা থেকে দূরে থাকার অস্ত্র হিসাবে। টোকিওতেও খেলেছিলেন মানসৌরি। তখন তিনি আফগানিস্তানের হয়ে খেলেছিলেন। তালেবানরা শাসন ভার নেওয়ার পর নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়। যার তিনি চলে যান ব্রিটেনে চলে যান।

এ বছর উদ্বাস্তু হিসাবে খেলতে নামবেন মানসৌরি। দ্বিতীয়বার অলিম্পিকে নামার সুযোগ পাচ্ছেন তিনি। কিন্তু তার বন্ধু মোহাম্মদ জান সুলতানির সে সুযোগ হয়নি। গতবার টোকিও অলিম্পিকে আফগানিস্তানের হয়ে নেমেছিলেন তিনি। কিন্তু কাবুলের বিমানবন্দরে এক আত্মঘাতী হামলায় মৃত্যুবরণ করেন সুলতানি।

আইএইচএস/

Read Entire Article