প্রবাসীদের ভোটের অ্যাপ ‘ভোট বিডি’ উদ্বোধন নভেম্বরে

1 hour ago 4

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার অ্যাপ পোস্টাল ভোট বিডি উদ্বোধন করা হবে।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশনে বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডন ও লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে এসব কথা বলেন ইসি সানাউল্লাহ।

কমিশনার সানাউল্লাহ প্রবাসীদের অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এটা শুরু করতে হবে যে স্কেলেই হোক না কেন। আমরা চাই প্রবাসীরা শুধু আজ নয়, আগামীতেও আমাদের সঙ্গে থাকবেন। যেন শুরুতেই আমরা ব্যর্থ না হই।’ তিনি জানান, নভেম্বর নাগাদ অ্যাপ চালু হলে সেটি প্রবাসীদের কাছে উপস্থাপন করা হবে।

অ্যাপটা খুব সংক্ষেপে স্ক্রিন শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে প্রেজেন্ট করবো। এ অ্যাপটা আপনারা আগামী নভেম্বর থার্ড উইকে চালু করবো। সেখানে আমরা সবকিছু বলে দিব তার আগে যথাযথ সার্কুলেশনের মাধ্যমে এটা নিয়ে কাজ করছি।পোস্টাল ব্যালটে প্রবাসীদের ভোট নিয়ে গোপনীয়তার চ্যালেঞ্জ আছে। গোপনীয়তা যেন লঙ্ঘিত না হয়, সেজন্য সচেতনতা তৈরি করতে হবে।ভোটের আগে শেষ সময়ে আদালত কর্তৃক কোন আসনের প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হলে সেই আসনের সব প্রবাসী ভোট বাতিল হবে। এ সীমাবদ্ধতা নিয়ে এগোচ্ছে ইসি।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার বাস্তবায়নে নেওয়া উদ্যোগ সম্পর্কে বিস্তারিত বক্তব্য দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

সানাউল্লাহ বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রবাসী ভোটের ছয়টি প্রচলিত পদ্ধতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ইন-পারসন ভোটিং ও পোস্টাল ব্যালট। অনলাইন ভোটিং এখনো সীমিত মাত্রায় প্রচলিত। মাত্র দুটি দেশ সম্পূর্ণভাবে অনলাইন ভোটিং চালু করেছে। প্রক্সি ভোটিং, মোবাইল পোস্টাল ব্যালট ও ফ্যাক্স ভোটিংও কিছু দেশে চালু আছে। বাংলাদেশ প্রস্তাব করেছিল পোস্টাল ব্যালট, প্রক্সি ভোটিং এবং অনলাইন ভোটিং—তবে আপাতত অনলাইন ভোটিং সম্ভব নয়। রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রক্সি ভোটের তেমন সমর্থন না থাকায় সেটি বাদ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, “এবার ইনশাআল্লাহ প্রবাসী বাংলাদেশীরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেবেন।” তবে বাস্তবতায় এর কাঠামোগত সীমাবদ্ধতা ছিল। ২০০৮ সালে লন্ডনে প্রথম আলোচনার পর প্রবাসী ভোটের বিধান আনা হলেও এতদিন তা কার্যকর হয়নি। সময় সংকটের কারণে ব্যালট পাঠানো ও ফেরত আনার সুযোগ তৈরি হয়নি। এজন্য এবার নতুন একটি হাইব্রিড সমাধান নেয়া হয়েছে। আগ্রহী ভোটাররা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করলে প্রতীক-সম্বলিত ব্যালট আগেই তাদের কাছে পাঠানো হবে।

নিবন্ধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুটি ধাপে কাজ হবে। প্রথমে ভোটার নিবন্ধন—যারা ইতোমধ্যে এনআইডি কার্ডধারী, তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছেন। এরপর আউট অব কান্ট্রি ভোটিংয়ের জন্য আলাদা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এর জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে, যা নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে চালু হবে। প্রতিটি অঞ্চলে ৭–১০ দিন সময় দেয়া হবে নিবন্ধনের জন্য, প্রয়োজনে অতিরিক্ত ৩–৭ দিন সময় রাখা হবে।

গ্লোবাল অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পোস্টাল ব্যালটে নিবন্ধনের হার মাত্র ২.৭ শতাংশ এবং এর মধ্যে ভোট সংগ্রহের হার ৩০ শতাংশের নিচে। তবুও বাংলাদেশের প্রবাসীরা অন্যদের তুলনায় বেশি আগ্রহী। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমাদেরও প্রত্যাশা সীমিত রাখতে হবে, তবে আমরা ব্যর্থ হব না।”

তিনি আরও জানান, পোস্টাল ব্যালটের দুটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। একটি হলো ভোটের গোপনীয়তা রক্ষা এবং আরেকটি হলো আদালতের আদেশে প্রার্থী তালিকা পরিবর্তন হলে বিদেশ থেকে প্রাপ্ত ভোট বাতিল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি। এছাড়া বিশ্বব্যাপী ডাকযোগে ব্যালট পৌঁছার ব্যর্থতার হার প্রায় ২৪ শতাংশ।

এমওএস/এমএএইচ/জিকেএস

Read Entire Article