রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় যশোরের খ্যাতিমান সাংবাদিক দৈনিক সংবাদের বিশেষ প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুকুনউদ্দৌলাহর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (২৩ আগস্ট) জোহরবাদ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান শেষে কারবালা কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে শুক্রবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ‘গ্রাম-গ্রামান্তরে’র লেখক খ্যাতিমান এ সাংবাদিক পাঁচ দশকের বেশি সময় সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ছিলেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, কয়েকমাস তিনি হার্ট ও কিডনিজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। ২৭ জুলাই গুরুতর অসুস্থ হয়ে ঢাকার ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালটিতে তিনি দেশবরেণ্য চিকিৎসক অধ্যাপক এমএ রশিদের তত্ত্বাবধায়নে নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন। গত ১৯ আগস্ট তার হার্টে তিনটি রিং স্থাপন শেষে বৃহস্পতিবার তিনি যশোরে ফিরে আসেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রাতে তার মরদেহ শহরের খালধার রোডের নিজ বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার দুপুর ১২টায় তার মরদেহ প্রথমে উদীচী কার্যালয়ে এবং পরে প্রেস ক্লাব ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় যশোর জজকোর্ট প্রাঙ্গণে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে কেন্দ্রীয় ঈদগাহের পরিবর্তে সেখানে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান এবং পরে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর যশোর কারাবালা কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
সাংবাদিক রুকুনউদ্দৌলাহর বাবা মরহুম মোকসেদ আলী। রুকুনউদ্দৌলাহর শৈশব-কৈশোর কেটেছে নওগাঁয়। সেখানে থাকতেন অগ্রজ আসফউদ্দৌলার কাছে। নওগাঁ কেডি স্কুলে পড়াকালীন বেজে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের দামামা। রাজনৈতিক সচেতন রুকুনউদ্দৌলাহ পরিবারের সঙ্গে চলে যান ভারতে। সেখানে শিলিগুড়িতে প্রশিক্ষণ শেষে ফ্রিডম ফাইটার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
তার লেখা শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে ‘গ্রাম-গ্রামান্তরে’, নবযুগ প্রকাশনী থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধে যশোর’, নবরাগ প্রকাশনী থেকে ‘আমার কৈশোর আমার মুক্তিযুদ্ধ’, ‘মানুষের ভাবনা মানুষের কথা’ এবং ‘ছোট ছোট কথা অচেনা মানুষ’, ‘পতাকার অক্ষত ভূমি’ নামে বই প্রকাশিত হয়েছে।
মিলন রহমান/আরএইচ/এএসএম