ঠাকুরগাঁওয়ে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের ঘটনায় ১২ ঘণ্টা পর থানায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় এজহারভুক্ত শিক্ষক মোজাম্মেল হক মানিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৮ মার্চ) রাতে ভুল্লী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সরকার মামলা রুজুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অভিযুক্ত মোজাম্মেল হক মানিক জেলা সদরের আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কচুবাড়ি মাদারগঞ্জ হাজিপাড়া গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দীনের ছেলে এবং কচুবাড়ি মাদারগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
গ্রেফতারের পর রাত সাড়ে ১১টায় অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষক মোজাম্মেল হক মানিককে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে ভুল্লী থানা পুলিশ। এসময় ক্ষিপ্ত জনতা তাকে দেখার জন্য হাসপাতালের চারপাশে ভিড় জমায়। পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে কড়া নিরাপত্তায় ওই শিক্ষককে থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে স্কুল শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় রোববার বেলা ১১টায় জেলা শহরের চৌরাস্তায় ও ভুল্লী থানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল এবং মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়েছেন ছাত্রসমাজ ও সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে ভুল্লি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সরকার জানান, ধর্ষণের ঘটনায় ভুল্লী থানায় ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে একজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। মামলাটি এরই মধ্যে রুজু করা হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে আসামিকে আদালতে তোলা হবে।
বিদ্যালয় বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোজাম্মেল হক মানিক স্কুলের বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়ান। প্রতিদিনের মতো প্রাইভেটে যায় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। এ সময় সুযোগ বুঝে একটি কক্ষে নিয়ে পাশবিক নির্যাতনের পর ধর্ষণ করে পালিয়ে যান শিক্ষক। পরবর্তীতে শিশুটির চিৎকার চেঁচামেচিতে স্থানীয়রা এগিয়ে আসার আগেই ওই শিক্ষকের লোকজন তাকে উদ্ধার করে জেলা শহরের সেবা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসে। গোপনে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টার কথা জানতে পেরে সংবাদ কর্মীরা ছুটে গেলে দ্রুত শিশুটিকে জেনারেল হাসপাতালে হস্তান্তর করে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
এসময় সংবাদকর্মীরা ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেয়। ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে জেলার অন্যান্য গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে তারা পালিয়ে যায়।
অভিযোগ রয়েছে এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে অনৈতিক কাজের চিকিৎসা দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয় জড়িতরা।
ভুক্তভোগীর স্বজনরা এসে মেয়েটিকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। পরবর্তীতে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা দ্রুত ছুটে যান হাসপাতালে। ঘটনা পর্যালোচনা করে ভুক্তভোগীকে সহায়তার পাশাপাশি দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।
তানভীর হাসান তানু/এফএ/এমএস