ফেসবুকে দিয়েছিলেন বিনামূল্যে লাশ পরিবহনের খবর, তিনিই এখন যাত্রী!

2 hours ago 4
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের অসহায় রোগী ও লাশ পরিবহনের জন্য এক প্রবাসী বিনামূল্যে স্পিডবোট চালু করেছেন। ৮ অক্টোবর ওমানে সড়ক দুর্ঘটনার একদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে এমন খবর পোস্ট দিয়েছিলেন মগধরা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে মো. আমিন মাঝি। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তিনিই হলেন এ সেবার দ্বিতীয় যাত্রী। ওমানে নিহত অপর ছয়জন এই আমিনের অধীনেই কাজ করতেন। আমিন মাঝির দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে বড় মেয়ের বিয়ের কথা চূড়ান্ত হয়েছিল। কিছুদিন পর দেশে এসে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করার কথা ছিল তার। আর টানাটানির সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে দুই বছর আগে ঋণ করে ওমান গিয়েছিলেন পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন রনি। বাড়িতে ছোট্ট চায়ের দোকান চালিয়ে সংসার চলত কিছুটা কষ্টে। স্বপ্ন ছিল—প্রবাসের কষ্টার্জিত টাকায় পরিবারকে একটু স্বস্তি দিবেন। কিন্তু ভাগ্যের খেলায় সেই স্বপ্নপূরণ হলো না। তিনি আড়াই বছর আগে বিয়ে করেন, দেড় বছর বয়সী এক সন্তান রেখে গেছেন। দুই মাসের ছুটি শেষে মাত্র ১ মাস ২১ দিন আগে ওমানে ফিরে গিয়েছিলেন।  সারিকাইত ইউনিয়নের আরেকজন মো. রকি  সাত বছর ধরে ওমানে কাজ করতেন। আরেক নিহত মো. আরজু একই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সিদ্দিক মাঝির বাড়ির বাসিন্দা। পা  বর্তী মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের মো. জুয়েল আট মাস আগে বাড়িতে এসেছিলেন।  স্থানীয়রা আরও জানান, দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া সাত প্রবাসীর মধ্যে ছয়জনই অসচ্ছল। ভাঙা টিনের বাড়িই তাদের সম্বল। এর মধ্যে পাঁচজনেরই চার থেকে ছয় মাস বয়সী সন্তান রয়েছে। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন কালবেলাকে বলেন, সকাল সাড়ে ৭টায় বাঁশবাড়িয়া থেকে মরদেহ স্পিডবোটযোগে সন্দ্বীপে আনা হয়। পরে জানাযা শেষে দাফন করা হয়। জানাজা জনসমুদ্রে রূপ নেয়।  তিনি বলেন, সাহাবুদ্দীন আর বাবলুর বন্ধুত্ব ছোটবেলা থেকেই। একসঙ্গে বেড়ে ওঠা থেকে প্রবাসে কাজ করা, আর এখন মৃত্যুর পর পাশাপাশি কবরে দাফনও হলো। দুনিয়াতে একসঙ্গে ছিলেন, পরকালেও তেমনই থাকবেন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি নিহতদের পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতা বিবেচনায় সাতজনের পরিবারের সাতজনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার দাবি জানান। সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মংচিংনু মারমা কালবেলাকে বলেন, সকালে মরদেহ সন্দ্বীপ এসে পৌঁছায়। পরে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করার ও প্রাপ্য তারা সবই পাবেন।
Read Entire Article