ফয়জুন্নেসা চৌধুরানীর প্রতিকৃতিতে দেওয়া কালি অবশেষে মোছা হলো

2 weeks ago 15

অবশেষে কুমিল্লায় নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে লাগানো কালি মুছে ফেলা হয়েছে।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর ঈদগাহ মোড় গোলচত্বরে তাদের প্রতিকৃতিতে লেপন করা কালি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মুছে ফেলা হয়।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ওইদিন বিকেলেই কিছু দুষ্কৃতকারী ঈদগাহ মোড় তাদের প্রতিকৃতে কালি লেপন করে দেয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হকের উদ্যোগে ঈদগাহ মোড়ে স্থাপিত গোলচত্বরে নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অন্যতম রূপকার বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, ভাষাসৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, সংগীতজ্ঞ শচীন দেববর্মন, বার্ডের প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খানসহ কুমিল্লার একাধিক কীর্তিমান মানুষের প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন দুর্বৃত্তরা নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে কালিমা লেপন করে বিকৃত করে দেয়।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রতিকৃতিতে লেপন করা কালি মোছতে গেলে বাসদের কুমিল্লা জেলার সমন্বয়ক নেতা আবদুর রাজ্জাকের ওপর হামলা করে দুর্বৃত্তরা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কুমিল্লার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সংগঠক ও কর্মীরা।

এ বিষয়ে বাসদের কুমিল্লা জেলার সমন্বয়ক নেতা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘শিক্ষার অন্যতম অগ্রদূত নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরী। যিনি অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদসহ বহু উপাসনালয়-হাসপাতাল নির্মাণ করেছেন। জমিদারির সম্পদ জনগণের মাঝে বিলীন করে দিয়েছেন। এই মহীয়সী নারীর ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের প্রতিকৃতির মুখে ঈদগা মাঠ ও শিল্পকলা একাডেমির সম্মুখে কে বা কারা কালিমা লেপন করেছিল। বিষয়টি ভাবতেই আমার খুব খারাপ লাগতো।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘মঙ্গলবার সাহস করে মুছতে গিয়েছিলাম। মোছা শুরু করলে জনৈক ব্যক্তি, সম্ভবত কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা, সঙ্গে বেশকিছু দেহরক্ষী ছিলেন, তারা সেখানে থাকা লোকজনকে সরিয়ে দেন, পরে আমাকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন, বুকে-পিঠে লাথি মেরে মাঠিতে ফেলে দেন। পরে পথচারীরা আমাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। আজ (বুধবার) জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কালি মুছে ফেলার খবর পেয়ে আমি আনন্দিত।’

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়সার বলেন, ‘৫ আগস্ট বিকেলে নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের মুখে কালিমা লেপন করা হয়। মঙ্গলবার বাসদের কুমিল্লা জেলার সমন্বয়ক নেতা আবদুর রাজ্জাক কালি মুছতে গিয়ে হামলার শিকার হন। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এরপর বিষয়টি আমাদের নজরে এলে বুধবার সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কালি পরিষ্কার করে দেওয়া হয়।

কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিনুল ইসলাম বলেন, বাসদ নেতার ওপর হামলার ঘটনায় লিখিত কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। তবে বিষয়টি জানার পর পুলিশ নিজ উদ্যোগে হামলাকারীদের গ্রেফতারে কাজ শুরু করেছে। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। আশা করি দ্রুত অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে পারবো।

জাহিদ পাটোয়ারী/ইএ/এএসএম

Read Entire Article