বগুড়ায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী তোজাম্মেল হক হত্যা মামলায় তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ আট বছর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শাজাহান কবীর এ রায় ঘোষণা করেন।
এই রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—বাবুল প্রামানিক (৩৫), মানিক মিয়া (৩২) এবং মিশু (৩০)।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—পিন্টু ওরফে মাজেদুর রহমান (৪৬), দেলোয়ার হোসেন দুলু (৫৮) এবং আশিক (৩০)। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে কেবল পিন্টু মিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন, বাকিরা পলাতক।
রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শান্ত নামে এক আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিশু দুই আসামির বিচার শিশু আদালতে এখনো চলমান রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল বাছেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর ব্যবসায়ী ও ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তোজাম্মেল বৈঠাভাঙা গ্রামে চাচাতো ভাইয়ের বিয়ের নিমন্ত্রণ খেতে যান। নিমন্ত্রণ খেয়ে মোটরসাইকেলে তিনি ও তার চাচাতো ভাই নয়ন, আসাদ বাড়িতে ফিরছিলেন। তারা দক্ষিণপাড়া এলাকায় পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা তোজাম ও নয়নকে কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তোজাম ও নয়নকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসাপাতালে নেওয়ার পথে তোজাম মারা যান।
পরে নিহতের বড় ভাই মমিন হোসেন পরদিন গাবতলী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে সিআইডির তৎকালীন পরিদর্শক সকির উদ্দিন ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
তিনি আরও জানান, রায়ে চার্জশিটভুক্ত তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই মামলায় আরও তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে কেবল পিন্টু আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা আদালতে হাজির হননি। আদালত জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারের পর তাদের সাজা কার্যকর হবে।
এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে নিহতের পরিবার। সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের অধিকাংশই পলাতক থাকায় ভুক্তভোগী পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে তারা শিগগিরই এ রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।

5 hours ago
9









English (US) ·