বদলে যেতে পারে ইউক্রেন যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি

2 months ago 35

বর্তমানে কুরস্কের ১ হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকা দখলে রেখেছে ইউক্রেন বাহিনী। বাইডেন প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্তের পর এখন তারা ওই অঞ্চলের চারপাশে হামলা চালাতে পারবে। এতে আগামী কয়েক মাসে যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি বদলে যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার গভীরে হামলা চালানোর অনুমতি পেয়েছে ইউক্রেন। প্রায় তিন বছর ধরে এ যুদ্ধ চললেও এতদিন মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভেতরে হামলা চালাতে দেননি বাইডেন। কিন্তু নিজের ক্ষমতার শেষ সময়ে এসে এবার সে অনুমতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো যাবে। এটা কিয়েভকে জানিয়ে দিয়েছে বিদায়ী বাইডেন প্রশাসন।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া ও উত্তর কোরীয় সেনাদের পাল্টা আক্রমণের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী। 

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রুশ বাহিনী ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে হামলা শুরু করতে পারে। তখন ইউক্রেনীয় বাহিনী কুরস্কে রুশ সেনাবহর, অবকাঠামো, গোলাবারুদের মজুতে সরাসরি হামলা চালাতে পারবে। যদিও শুধু এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্রের সরবরাহ হয়তো তাৎক্ষণিক যুদ্ধের গতি বদলে দিতে পারবে না, তবে ইউক্রেনকে অনেকটা এগিয়ে রাখবে। এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিয়েভে নিযুক্ত একজন পশ্চিমা কূটনীতিক বিবিসিকে বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, এটা যুদ্ধের নির্ণায়ক হবে। তবে এতে রাশিয়ার যুদ্ধব্যয় আরও বাড়তে পারে।’

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ায় হামলা চালাতে ইউক্রেনকে যে সবুজ সংকেত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, তা নিয়ে নতুন এক উত্তেজনা শুরু হয়েছে। বিদায়বেলায় প্রেসিডেন্ট বাইডেন কেন এ সিদ্ধান্ত নিলেন, তা নিয়ে যেমন আলোচনা চলছে, ঠিক তেমনি ইউক্রেন এ ধরনের হামলা করলে তার প্রভাব কেমন হবে, তা নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। 

এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া বলেছে, বাইডেন প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নিয়ে সংঘাতের আগুনে ঘি ঢালছে। এর ফলে আরেকটি বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি বেড়ে যাবে বলে মনে করছে দেশটি। এমনকি বাইডেনের এ সিদ্ধান্তে চটেছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র। তিনি বলেছেন, অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে বর্তমান প্রশাসন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করতে চায়। অবশ্য এখন পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।

দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে হামলা চালাতে এবারই প্রথম আনুষ্ঠানিক অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজ বলছে, রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে কিয়েভের হামলা চালানোর বিষয়ে আর কোনো বাধা নেই। এটা কিয়েভকে জানিয়ে দিয়েছে বিদায়ী বাইডেন প্রশাসন। এর আগে এ ধরনের হামলায় ওয়াশিংটনের সায় ছিল না। মার্কিন প্রশাসনের আশঙ্কা ছিল, রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে কিয়েভকে হামলা চালানোর অনুমতি ইউক্রেন যুদ্ধের আরও সম্প্রসারণ ঘটাতে পারে। এমন একসময় মার্কিন প্রশাসন আগের এ নীতি থেকে সরে এলো, যখন মাস দুয়েকের মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। 

আগামী ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া নিয়ে আপত্তি রয়েছে ট্রাম্পের। এমনকি তিনি ক্ষমতায় এলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করারও প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন। তাই এ সময়ে বাইডেন কেন এ সিদ্ধান্ত নিলেন, তা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।

Read Entire Article