বাচ্চা প্রসবের পর গাভি দুধ দেবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে গর্ভধারণ ছাড়াই ১৭ মাসের বকনা বাছুর দুধ দিচ্ছে! অস্বাভাবিক এ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে। না জেনে অনেকে একে অলৌকিক মনে করলেও স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিস বলছ, হরমোনের প্রভাবে বিরল এ বৈশিষ্ট্য দেখা যেতে পারে।
বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধুলিয়া মধ্যেচর গ্রামে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে।
সরেজমিন জানা যায়, এক বছর আগে বিদেশি জাতের চারটি গরু দিয়ে একটি খামার শুরু করেন বিদেশি জাতের চারটি বকনা বাছুর লালন-পালনের মাধ্যমে। তাদের মধ্যে ১৭ মাস বয়সী একটি বকনা বাছুর হঠাৎ দুধ দেওয়া শুরু করে। বাছুর প্রসব ছাড়াই গরুটি এভাবে দুধ দেওয়ায় বিস্মিত বাড়ির লোকজন। প্রথম প্রথম তারা সে দুধ ফেলে দিতেন।
এদিকে, গর্ভধারণের আগেই বকনা বাছুরের দুগ্ধবতী হওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গরুটিকে দেখতে আসছেন অনেকে। কুসংস্কারের প্রভাবে কেউ কেউ মানত করে সে দুধ কিনেও নিচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বিরল হলেও এ ঘটনা অস্বাভাবিক বা অলৌকিক কিছু নয়। হরমোনের তারতম্যে প্রাণীদেহে নানা রকম পরিবর্তনের মতো এ রকমও ঘটতে পারে। প্রতিদিন তিন কেজি করে সকাল-বিকেল দুধ দিচ্ছে।
গরুর মালিক মো. মহি উদ্দিন ফকির ধূলিয়া মধ্যেচর গ্রামের মৃত আ. মন্নান ফকিরের ছেলে।
স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাহাতাব হোসেন ফরিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি জীবনেও দেখিনি এমন অলৌকিক ঘটনা, বাচ্চাবিহীন গরুতে দুধ দেয়। আল্লাহর নেয়ামত, আমি নিজেও দেখেছি এবং সে দুধ খেয়েছি। গরুর মালিক মহি উদ্দিন ফকির আমাদের মসজিদের সভাপতি। এটা আল্লাহ তায়ালার কুদরত এবং নেয়ামত। যেভাবে আল্লাহ তায়ালা আমাদের তা খাওয়াচ্ছেন, ঠিক সেভাবে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা একান্ত কর্তব্য।
মহি উদ্দিন ফকির জানান, ১৭ মাস বয়সী বাছুরকে গোসল করাতে গেলে গরুটির দুধের বাঁট ফোলা দেখে ধারণা করেন এর বাত রোগ হয়েছে। পরে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করলে একজন ডাক্তার এসে জানান গরুটির ওলানে দুধ জমেছে। প্রথম কয়েক দিন ১-২ লিটার দুধ দেয়। এখন দুধের পরিমাণ বেড়েছে। প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি দুধ দিচ্ছে। পরিবারের সদস্যরা এই দুধ পান করছেন। মাঝেমধ্যে এলাকার লোকজনকেও বিনামূল্যে দিচ্ছেন তিনি।