প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক আরোপে দাম বেড়ে গেলে পণ্য কেনা কমিয়ে দেবেন ভোক্তারা। স্বাভাবিকভাবে কোম্পানিগুলোও কাঁচামাল হিসেবে কৃষিপণ্য সংগ্রহ কমিয়ে দেবে। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কৃষকরা। তারা ফসলের ভালো দাম পাবেন না।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানের পুলিশ প্লাজায় এমসিসিআই কনফারেন্স হলে জাগোনিউজ২৪.কম আয়োজিত ‘ভোক্তার কাঁধে বাড়তি করের বোঝা: উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি এম এ হাশেম।
এম এ হাশেম বলেন, কর বৃদ্ধির কারণে ভোক্তাকেও বেশি দামে খাবার কিনতে হবে। কম দামে বিস্কুট, কেকসহ প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য মিলবে না। কৃষকের মতো সাধারণ মানুষও ভুগবে। সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন দেশের শ্রমজীবী, প্রান্তিক কৃষক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সরকারকে এটা চিন্তা করতে হবে।
বাপার সভাপতি বলেন, বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার না হলে প্রক্রিয়াজাত কৃষিখাত খুব বড় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে এসব খাবার গেলে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা এমনিতেই বড় সমস্যায় আছি বেশ কয়েক বছর ধরে। আমাদের ১৬ শতাংশ ব্যাংকের সুদহার, দিনে আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না, গ্যাস থাকে না। কীভাবে টিকে থাকবো সে লড়াইয়ে অনেকে ব্যস্ত। বাড়িঘর বন্ধক দিয়ে ঋণ নিয়ে আমরা ব্যবসা করছি, তারপরও যদি ক্ষতিগ্রস্ত হই, সেটা কাম্য নয়।
- আরও পড়ুন
পরিবহন-বাজারে চাঁদাবাজি বন্ধ হলে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে
ভ্যাট-ট্যাক্সের জাঁতাকলে বিস্কুটের প্যাকেট আর কত ছোট হবে
এম এ হাশেম বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশে শুল্ককর বাড়ানোর আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলা হয়। আমাদের দেশে সেটা হয়নি। বিগত সরকারও করেনি, এ সরকারও করেনি। আমাদের জিজ্ঞাসা করারও প্রয়োজন মনে করে না। যখন খুশি তখন ট্যাক্স বাড়িয়ে দেবেন, কোন দেশে বাস করছি আমরা? সেক্ষেত্রে আমাদের ব্যবসায়ী সমাজেরও প্রতিনিধিত্বের ঘাটতি রয়েছে। আমাদের আরও শক্তভাবে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী, অর্থনীতিবিদ ড. এম এম আকাশ, অর্থনীতিবিদ এবং সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য রেজাউল হাসান, বাংলাদেশের নিট পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন-বিকেএমইর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ, ক্যাবের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ উদ্দিন নাসির, এসিআই ফুডসের চিফ বিজনেস অফিসার ফারিয়া ইয়াসমিন, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ও রাজীব চৌধুরী, বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি দৌলত আকতার মালা, সুপার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন ও সাবেক ব্যাংকার সাইফুল হোসেন।
জাগোনিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কে এম জিয়াউল হকের পরিচালনায় গোলটেবিল আলোচনা সঞ্চালনা করেন প্রতিষ্ঠানটির চিফ রিপোর্টার ইব্রাহীম হুসাইন অভি।
এনএইচ/বিএ/এমএমএআর/জেআইএম