বর্ষসেরা শব্দ ‘ব্রেন রট’: টিকটক ও রিলসের সঙ্গে কী সম্পর্ক?
আপনি কি কখনো ইনস্টাগ্রামের রিলস বা টিকটক ভিডিওতে এমনভাবে সময় কাটিয়েছেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গেছে, আর আপনি বুঝতেই পারেননি? যদি হ্যাঁ, তাহলে হয়তো আপনি ‘ব্রেন রট’ নামক এক নতুন প্রবণতায় ভুগছেন। এই শব্দটি অক্সফোর্ডের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।
সোমবার (০২ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
কী বোঝায় ‘ব্রেন রট’ দিয়ে?
‘ব্রেন রট’ বলতে বোঝানো হয় অতিরিক্ত নিম্নমানের অনলাইন কন্টেন্ট দেখার কারণে মানুষের মানসিক বা বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থার অবনতি। এটি সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে একটি ব্যাপক আলোচিত বিষয়, বিশেষ করে ‘জেন জি’ এবং ‘জেন আলফা’ প্রজন্মের মধ্যে।
২০২৩-২৪ সালের মধ্যে শব্দটির ব্যবহার ২৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি ইন্টারনেট সংস্কৃতি এবং ভার্চুয়াল জীবনের প্রভাবকে প্রতিফলিত করে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অ্যান্ড্রু প্রজিবিলস্কি বলেন, এই শব্দটি আমাদের সময়ের একটি স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি।
কোথা থেকে এলো ‘ব্রেন রট’?
‘ব্রেন রট’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার হয় ১৮৫৪ সালে, ইন্টারনেট আবিষ্কারের অনেক আগে। আমেরিকান লেখক হেনরি ডেভিড থরো তার বিখ্যাত বই ওয়ালডেন-এ এটি ব্যবহার করেছিলেন। তখন এটি সমাজের জটিলতাগুলো অবমূল্যায়নের কারণে মানসিক স্থিতি নষ্ট হওয়ার ইঙ্গিত দিত।
সাম্প্রতিক সময়ে এই শব্দটি সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হয়। নিম্নমানের কন্টেন্ট নিয়ে সমালোচনা করতে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
কীভাবে নির্বাচিত হলো?
ব্রেন রট শব্দটি অন্যান্য শর্টলিস্ট হওয়া শব্দ, যেমন ডিমিউর, রোমান্টিসি এবং ডাইনামিক প্রাইসিং-কে হারিয়ে সেরা হয়। এটি ইন্টারনেট সংস্কৃতি এবং আমাদের অবসর কাটানোর ধরনকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করছে।
অক্সফোর্ড ল্যাঙ্গুয়েজেসের প্রেসিডেন্ট ক্যাসপার গ্রাথওহল বলেন, ব্রেন রট শুধু একটি শব্দ নয়, এটি আমাদের ভার্চুয়াল জীবনের একটি প্রতিচ্ছবি। এটি দেখায়, কীভাবে আমরা সময় কাটাই এবং কীভাবে ইন্টারনেট আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করে।
অন্য বিজয়ী শব্দ
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির পাশাপাশি কলিন্স ডিকশনারি ‘ব্র্যাট’ শব্দকে বছরের সেরা শব্দ হিসেবে বেছে নিয়েছে। এটি একটি ভাইরাল অ্যালবাম থেকে নেওয়া হয়েছে এবং এর মানে হলো আত্মবিশ্বাসী এবং স্বাধীন মনোভাব।
ব্রেন রট আমাদের সময়ের একটি বাস্তবতা, যা সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহারের প্রভাব তুলে ধরে। আপনি কি এই প্রবণতার মধ্যে আছেন? এখনই সময় নিজের স্ক্রিন টাইম কমিয়ে ফেলার!