বাংলাদেশিদের চিকিৎসার পক্ষে অধিকাংশ ভারতীয় চিকিৎসক
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের ভিসা নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। এরপর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলার দাবি তুলে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশিদের চিকিৎসা না করার ঘোষণাও দিয়েছে বিভিন্ন হাসপাতাল। তবে এ মতের পক্ষ নন অধিকাংশ ভারতীয় চিকিৎসক। তারা বাংলাদেশিদের চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে চান।
বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে থেকে কলকাতার হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে হিন্দুদের চেয়ে মুসলিম বেশি। ধর্ম-বর্ণ বা জাতিগত কোনো কারণে বাংলাদেশিদের চিকিৎসা বন্ধ করা হবে না।
পেয়ারলেস হাসপাতালের সিইও সুদিপ্ত মিত্র বলেন, কোনোভাবেই আমরা বাংলাদেশের রোগীদের সঙ্গে বৈষম্য করব না। কেউ সন্ন্যাসী হোক, সন্ত্রাসী হোক বা তুচ্ছ অপরাধী, তারা সবাই আমাদের ডাক্তার ও হাসপাতালের কাছে কেবলই রোগী।
আরএন ঠাকুর ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল অব কার্ডিয়াক সায়েন্সেসের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান দীপক শঙ্কর রায় বলেছেন, আগে বাংলাদেশ থেকে তার বিভাগে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন রোগী আসতেন। বর্তমানে এ সংখ্যা কমে প্রায় পাঁচজনে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, ভিসা এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত সমস্যার কারণে কম রোগী আসছেন। ডাক্তার হিসেবে আমরা রোগীদের সম্প্রদায়, ধর্ম বা জাতীয়তা দেখি না। তারা সবাই সমান। আমাদের প্রতিবেশী দেশ থেকে যারা আসবে আমরা তাদের চিকিৎসা অব্যাহত রাখব।
আনন্দপুরের ফোর্টিস হাসপাতালের কার্ডিও থোরাসিক এবং হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন কে এম মান্দানা বলেন, যে বাংলাদেশি রোগীদের প্রতি প্রশ্রয় না দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। কেননা তারা কলকাতাকে তাদের সেকেন্ড হোম বলে মনে করেন।
তিনি বলেন, কলকাতার ডাক্তার এবং বাংলাদেশি রোগীদের মধ্যকার সম্পর্ক কয়েক বছর ধরে শক্তিশালী। বর্তমান অস্থিরতা এই সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। অনেক রোগী চিকিৎসার জন্য আসতে পারছেন না। আমরা তাদের নিয়ে চিন্তিত। কেননা তাদের অবস্থা খারাপ এবং গুরুতর হতে পারে।
পেয়ারলেস হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের প্রধান অজয় সরকার বলেন, বাংলাদেশে যা ঘটছে তা উদ্বেগজনক। যেকোনো বিবেকবান সরকারের উচিত তার প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা। বাংলাদেশ থেকে আসা রোগীদেরসহ সকল রোগীর সঙ্গে আমরা সমান আচরণ করব বলেও জানান তিনি।