বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আপনারা যখন এত বেশি আত্মবিশ্বাসী, যে সরকারি দল হবেন। তাহলে নির্বাচনে আসেন না কেন? আজকে এই বাহানা, কালকে ওই বাহানা, পরশু আরেক বাহানা দিয়ে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছেন কেন? উদ্দেশ্য কি সেটা তো আমরা জানি।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ‘তারুণ্যের রাষ্টচিন্তার তৃতীয় সংলাপ-মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ আলোচনা সভার আয়োজন করে অপর্ণ আলোক সংঘ।
এসময় বিএনপি নেতা বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কালকে কয়েকটা সমাবেশ হয়েছে সারাদেশে, বিভিন্ন বিভাগ পর্যায়ে। পত্রিকায় আজকে হেডলাইন দেখলাম, কোথাও বলছে , বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠন করবে, বিএনপি বিরোধী দলে যাবে। তো ভাইসাব আপনারা কি নির্ধারণ করে দিয়েছেন, বিএনপি বিরোধী দলে যাবে নাকি জনগণ করবে? কিন্তু আমার জবাব হলো আপনারা যখন এত বেশি আত্মবিশ্বাসী, যে সরকারি দল হবেন। তাহলে নির্বাচনে আসেন না কেন? আজকে এই বাহানা, কালকে এই বাহানা, পরশু আরেক বাহানা দিয়ে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছেন কেন? উদ্দেশ্য কি সেটা তো আমরা জানি।
সব রাজনৈতিক দল এবং দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আসুন, আমরা কোনো সংকট সৃষ্টি না করি এবং সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি। আমাদের ফ্যাসিস্টবিরোধী যে জাতীয় ঐক্য গঠিত হয়েছে, সেটাকে আমরা সমুন্নত রাখবো এবং এটাকেই শক্তিতে পরিণত করে, ইনশাআল্লাহ। গণতান্ত্রিক চর্চাকে অব্যাহত রাখতে পারবো এবং তাহলেই আমরা সফলকাম হবো।
সালাহউদ্দিন বলেন, ঐকমত্য কমিশনে যদি ঐক্যমত পোষণ না হয় তাহলে যেভাবে প্রচলিত বিধিবিধানসম্মত হবে সেভাবেই হবে। এখানে যেন আমরা পরস্পর জবরদস্তি না করি। যে পরিবর্তনগুলো আমরা সামনের দিনে আনতে চাচ্ছি সেটা রাতারাতি হবে না। সেটার জন্য সময় দরকার পর্যায়ক্রমভাবে যাওয়া দরকার। একটা গণতন্ত্রবিহীন অবস্থা থেকে আমরা যে জায়গায় আসতে পেরেছি, ইনশাআল্লাহ এই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চার মধ্য দিয়ে আমরা একটা শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে বিনির্মাণ, শহীদের প্রত্যাশা পূরণ, জনপ্রত্যাশা পূরণ করতে পারবো। আমাদের যে আকাঙ্ক্ষা আছে একটা বৈষম্যহীন, সাম্যভিত্তিক ন্যায়বিচারভিত্তিক রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠার সেই আকাঙ্ক্ষা আমরা পূরণ করতে পারবো।
সরকারে ছাত্র প্রতিনিধি যাওয়া ঠিক হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্র প্রতিনিধি সরকারের দায়িত্বে আসাটা আমার মনে হয় এটি সঠিক বিবেচনার সিদ্ধান্ত হয়নি। আজকে প্রেশার গ্রুপ হিসেবে জাতিকে নির্দেশক হিসেবে তারা থাকতে পারতো। যেটা প্রশ্ন এখনও তারা ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে যারা সরকারে বসে আছে, প্রতিদিনই তাদেরকে লাইবিলিটির (দায়) কাদা নিতে হচ্ছে, হবে।
জাতীয় পার্টির নেত্রী রওশন এরশাদের মন্তব্য তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, রওশন এরশাদ বলেছিলেন, মাননীয় স্পিকার আপনি বলে দেন, আমি সরকারি দল না বিরোধী দল। এইরকম কোন চর্চা যেন আমরা ভবিষ্যতে না করি।
বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর মাঠের আন্দোলনের সমালোচনা করে সালাহ উদ্দিন বলেন, আলোচনা টেবিলে আলোচনা চলমান থাকা অবস্থায় মাঠে আন্দোলন করাটা স্ববিরোধী।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, অনেকে বলছে, এই সরকার পুরোপুরি সাংবিধানিকও না আবার বলছে এটা পুরাপুরি বিপ্লবী সরকারও না বলছে এটা মাঝামাঝি সরকার। আমি বললাম এটা নির্ধারণ হওয়া দরকার, এক বছর পরে এসে তারা কেন এ প্রশ্ন তুলছে, তার পিছনে একটা উদ্দেশ্য থাকতে পারে, এই ধরনের প্রশ্নের মধ্য দিয়ে সাংবিধানিক সংকট যদি সৃষ্টি হয়, তাহলে বেনিফিশিয়ারি কে হবে? কোন অসাংবিধানিক শক্তি। বেনিফিশিয়ারি হবে পতিত স্বৈরাচার।
নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে আমরা রাষ্ট্রকে সেই জায়গায় নিয়ে যাচ্ছি কেন? এই প্রশ্নগুলোকে তুলে এই সংবিধানকে এই সরকারকে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার সরকার কি না সেই প্রশ্ন যদি আজকে উত্থাপন করা হয় তাহলে তাদের মতলব আলাদা।
কেএইচ/এসএনআর/এমএস