চাঁদা না দেওয়ায় গাভি নিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। এরমধ্যে বাছুরটি গাভির দুগ্ধ পান না করতে পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কোনো উপায় না পেয়ে বাছুরটি কোলে নিয়ে আদালতে হাজির হন গৃহবধূ নারগিস আক্তার।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) এ বিষয়ে বিচার চাইতে ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে যান তিনি। সেখানে আদালত চত্বরে বোতলে করেই বাছুরটিকে দুধ খাওয়াতে দেখা যায় নারগিসকে। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই গৃহবধূর স্বামী আবু বকর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি এলাকাছাড়া। স্ত্রী ও শিশু সন্তানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না। এমনকি কোনো খরচ বহন করছেন না আবু বকর।
গৃহবধূ নারগিস আক্তার জানান, গত কয়েক মাস ধরে স্বামী তার খোঁজ রাখছেন না। পোশাক কারখানায় চাকরি করে কিছু অর্থ জমিয়ে সম্প্রতি একটি দুধের গাভী কেনেন তিনি। তার এক মাসের একটি বাছুরও আছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামীর কাছে ২০ হাজার টাকা পাওনার অজুহাত দেখিয়ে চাঁদা দাবি করে মো. বেলাল খান বুধবার (১৪ মে) সকালে দুধের গরুটি নিয়ে যান। গরুটিকে নিয়ে যাওয়ায় দুধ না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে বাছুরটি।
অভিযুক্ত বেলাল খান শুক্তাগড় ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ৯ বছর আগে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প থেকে নার্গিসের স্বামী আবু বকরকে ২০ হাজার টাকা তুলে দেই। যা এখন সুদে-আসলে ৩০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। টাকা না দেওয়ার কারণে আমি গরু নিয়েছি।
বিএনপি নেতা আবু বকরের দাবির বিষয়ে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের শুক্তাগড় গ্রামের মাঠকর্মী আল আমিন বলেন, যখন প্রত্যন্ত এলাকায় প্রকল্প থেকে ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়েছিল, তখন কোনো জামিন বা জিম্মাদার নেওয়া হয়নি। আমার তালিকায় আবু বকরের নাম নেই। আমরা তাকে চিনিও না। অযথাই আমাদের প্রকল্পকে জড়িত করা হয়েছে।
তবে এ ঘটনায় আদালতে কোনো মামলা হয়নি। পরে স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় বাছুরটিকে মা গরুর দুধ খাওয়ানোর শর্তে ফিরে যান নারগিস। একই সঙ্গে বাছুরটি নিয়ে দুধ খাওয়ানোর জন্য বেলাল খানের বাড়ি রওনা হন।
শুক্তাগড় ইউপি সদস্য নুর আলম মল্লিক জানান, নারগিস ও বেলালের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
মো. আতিকুর রহমান/জেডএইচ/জিকেএস