বিএনপি শিক্ষা নেয়নি, দলটি নিশ্চিত বঙ্গোপসাগরে ডুববে

4 hours ago 5

 

বিএনপির ‘দ্রুত নির্বাচন’ দাবির সমালোচনা করে কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, দলটির অনেক নেতা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি। তারা নিশ্চিতভাবে বঙ্গোপসাগরে ডুববে।

তবে দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। ফরহাদ মজহার বলেন, তার অবস্থান অভ্যুত্থানকারীদের শক্তি জুগিয়েছে। তাই বিজয়ের পরপরই তাকে মুক্ত করা হয়েছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) যশোর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ আয়োজিত আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

ফরহাদ মজহার বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত সরকারকে ‘নির্বাচিত সরকার’ হিসেবে গণ্য করা উচিত। তার মতে, শুধু ভোটের মাধ্যমেই সরকার নির্বাচিত হয় এই ধারণা ভুল। গণঅভ্যুত্থানই প্রকৃত গণতন্ত্রের প্রতিফলন এবং জনগণের অভিপ্রায়েই এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি বলেন, চব্বিশ সালে ছাত্র-জনতা-সৈনিকদের গণঅভ্যুত্থান ঘটেছিল, কিন্তু ‘ফ্যাসিবাদী সংবিধান’ বহাল থাকায় প্রতিবিপ্লবও সংঘটিত হয়েছে। সংবিধান না থাকলেও ফরমান দিয়ে দেশ চালানো সম্ভব। তবে অভ্যুত্থানকারীরা একের পর এক ভুল করে চলেছেন, যার মধ্যে অন্যতম ছিল চুপ্পুর (বর্তমান রাষ্ট্রপতি) কাছে শপথ নেওয়া। এখন তারা মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা করছেন, যা আরও একটি ভুল।

মধ্যপন্থাকে ‘সুবিধাবাদ’ আখ্যা দিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, তরুণদের দল হতে হবে সব ধরনের ফ্যাসিবাদবিরোধী। কেবল বাঙালি জাতিবাদের বিরোধিতা করলেই চলবে না, ধর্মীয় ফ্যাসিবাদসহ সব রূপের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে।

বিএনপির ‘দ্রুত নির্বাচন’ দাবির সমালোচনা করে কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, দলটির অনেক নেতা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি। তারা নিশ্চিতভাবে বঙ্গোপসাগরে ডুববে

ভারত ক্রমাগত উসকানি দিচ্ছে বলে সতর্ক করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আরও কঠিন পরিস্থিতি আসছে। নিজেদের মধ্যে সংঘাত ও ক্ষমতার লড়াই বন্ধ না করলে পরাজিত ফ্যাসিবাদীরা দিল্লির সহায়তায় ফিরে আসতে পারে। এরইমধ্যে মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তারা ইউনূস সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের বিশাল অংশগ্রহণের প্রশংসা করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘তারা আজ কোথায়? কেন আমরা তাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছি? কেন তারা রাজনীতির সামনের কাতারে আসতে পারছে না? মুহাম্মদ (স.)-এর সময় নারীরা মসজিদে যেতো, যুদ্ধ করতো। তাহলে আজ কেন তাদের ঘরে বন্দি রাখতে চাই?’

বিদ্যমান সংবিধান ‘বাংলাদেশের নয়’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সত্তরের নির্বাচন হয়েছিল পাকিস্তানের নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য। স্বাধীনতার পর যে সংবিধান রচিত হয়েছে, তার জন্য জনগণের ম্যান্ডেট ছিল না। এটি সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের বিপরীত।

সভায় আরও বক্তব্য দেন লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট বেনজীন খান, এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ, মোহাম্মদ রোমেল প্রমুখ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান সভা পরিচালনা করেন।

এর আগে, শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে ‘প্রাচ্যসংঘ’-এর সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ফরহাদ মজহার। এসময় ফকিরদের আস্তানায় হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ভারত এ সুযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচার করবে যে, বাংলাদেশে ধর্মীয় ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই, যা দেশকে নতুন সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

মিলন রহমান/এসআর/জেআইএম

Read Entire Article