অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ এখন টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নতুন এক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। বিভিন্ন খাতে সংস্কারের ফলে তা সম্ভব হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ৮০তম সাধারণ অধিবেশনের সাধারণ বিতর্কে ভাষণের শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘রাজস্বখাতের ঐতিহাসিক সংস্কারের পাশাপাশি আমরা বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করেছি। ব্যাংক খাতে অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ, নতুন ব্যাংক রেজোলিউশন অধ্যাদেশ ও আসন্ন ডিপোজিট প্রটেকশন অধ্যাদেশের মাধ্যমে শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা এনেছি। পুঁজিবাজারে সংস্কার টাস্কফোর্স ও শক্তিশালী তদন্তব্যবস্থার মাধ্যমে তদারকি আধুনিকীকরণ করেছি। সরকারি ক্রয়ব্যবস্থায় ডিজিটাল টেন্ডারিং বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং স্বার্থের সংঘাত সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন পাবলিক অ্যাকাউন্টস অডিট অধ্যাদেশের মাধ্যমে জবাবদিহিতা আরও জোরদার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, আর্থিক স্থিতিশীলতা অর্জনে সীমাবদ্ধ না থেকে আমরা বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলছি।
বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো ১৯টি সংস্থাকে একীভূত করে কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজ করেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দ্রুত বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিশেষায়িত বাণিজ্য আদালত গঠিত হয়েছে। বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সাবলীলভাবে প্রদানের জন্য সমন্বয় কমিটি গঠন করেছে। নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষগুলোকে একই ছাদের নিচে নিয়ে আসা হয়েছে। ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে। এফডিআই হিটম্যাপ ও জাতীয় সেমিকন্ডাক্টর টাস্কফোর্স বিনিয়োগকারীদের কাছে উচ্চ সম্ভাবনাময় খাতগুলোর তথ্য সহজ ও স্বচ্ছভাবে তুলে ধরছে।
তিনি জানান, বাণিজ্য লজিস্টিকসেও উন্নতি ঘটছে। চট্টগ্রাম বন্দরে গত আগস্টে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ২৭ দশমিক৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে, যা দক্ষতার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নির্দেশ করে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এসব উদ্যোগ অর্থনৈতিক শাসনব্যবস্থাকে যেমন সুদৃঢ় করছে, তেমনি বিনিয়োগকেও নিরাপদ করছে। এসব সংস্কারের ফলে বাংলাদেশ এখন টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নতুন এক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে।
এমইউ/এসআর