ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি সোমবার ঘন ও বিষাক্ত ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ডের তুলনায় শহরের বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়েছে ১৬ গুণেরও বেশি।
প্রায় তিন কোটি মানুষের এই শহরটি শীতকালে নিয়মিতভাবেই ভয়াবহ দূষণের কবলে পড়ে। ঠান্ডা বাতাসে দূষণকারী উপাদান মাটির কাছাকাছি আটকে থাকে। ফসলের খড় পোড়ানো, কারখানার ধোঁয়া ও যানবাহনের নির্গমন মিলে তৈরি হয় প্রাণঘাতী পরিবেশ।
এর সঙ্গে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দীপাবলি উৎসবে আতশবাজির কারণে দূষণ আরও বেড়েছে। যদিও সুপ্রিম কোর্ট সবুজ আতশবাজির অনুমতি দিয়েছিল, যা তুলনামূলক কম ক্ষতিকর। তবুও নিষেধাজ্ঞা অনেকাংশে উপেক্ষিত হয়েছে।
‘আইকিউএয়ার’-এর তথ্যমতে, সোমবার শহরের কিছু এলাকায় প্রতি ঘনমিটারে পিএম ২.৫ কণার মাত্রা পৌঁছেছে ২৪৮ মাইক্রোগ্রামে। এই অতিক্ষুদ্র কণা রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
সরকারের এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট কমিশন জানিয়েছে, আগামী দিনগুলোতে বায়ুর মান আরও খারাপ হতে পারে। ডিজেল জেনারেটর ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রথমবারের মতো নয়াদিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’-এর পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আকাশে রাসায়নিক ছুড়ে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি ঘটিয়ে বাতাস পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হবে।
দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী মনজিন্দর সিং সিরসা জানিয়েছেন, পরীক্ষামূলক উড়ান ও পাইলট প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে।
‘দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ’-এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০০৯-১৯ সালের মধ্যে ভারতে বায়ুদূষণজনিত কারণে ৩৮ লাখ মানুষ মারা গেছে। ইউনিসেফ সতর্ক করেছে, দূষিত বাতাসে শিশুদের শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে।