গাজীপুরের কাশিমপুর এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ভেতরে অবস্থিত বন্ধ ১৬টি কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকরা চন্দ্রা নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তারা কয়েকটি যানবাহনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে মহাসড়ক অবরোধ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
আন্দোলনকারী শ্রমিকদের দাবি, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ভেতরে বন্ধ সব ফ্যাক্টরি খুলে দেওয়া, ব্যাংকিং ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা, এলসি খুলে দেওয়া এবং অন্যান্য বকেয়া পরিশোধ করতে হবে।
শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণিজ্যবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬টি কারখানায় প্রায় ৪২ হাজার শ্রমিক কর্মচারী কাজ করেন। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে তাদের বেতন নিয়মিত দেওয়া হচ্ছিল না। এ নিয়ে শ্রমিকরা ঘনঘন আন্দোলন করছিলেন। এসব কারণে সরকার ঋণ দিয়ে শ্রমিকদের কয়েক মাসের বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা করে। পরে গত ১৫ ডিসেম্বর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেক্সিমকোর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটির সভার সিদ্ধান্তের পর বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬ কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বেশ কয়েকদিন ধরে শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার বিকেলে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানাধীন মোজার মিল এলাকায় চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করে বেক্সিমকোর শ্রমিক-কর্মচারীরা। লাকড়ি ও আবর্জনায় আগুন জ্বালিয়ে সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ভোগে পড়েন সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা।
খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, মহানগর পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু শ্রমিকরা মহাসড়ক ছেড়ে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় উত্তেজিত কিছু শ্রমিক সড়কের যানজটে আটকা গণপরিবহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সড়কের পাশের কয়েকটি দোকানে হামলা করে। পরে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পরিদর্শক রাজিব হোসেন বলেন, বেক্সিমকোর আন্দোলনকারী শ্রমিকরা চন্দ্রা নবীনগর সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে আন্দোলন করার সময় একটি বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যানসহ আশপাশের কয়েকটি দোকানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।