বেবি বুমার্সরা পালন করছেন বিশাল এক দায়িত্ব

3 weeks ago 7

নেটপাড়ায় মিলেনিয়াল, জেন-জি আর জেন আলফা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার যেন শেষ নাই। প্রতিটি প্রজন্ম নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে কথা বলতে চায়। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপস্থিত থেকেও তুলনামূলক নীরব প্রজন্মটির বিষয়ে ভেবে দেখেছেন কি?

হ্যাঁ, বেবি বুমার্সদের কথাই বলছি। অর্থাৎ ১৯৪৬ থেকে ১৯৬৪ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া মানুষরা। প্রযুক্তি ও সংস্কৃতির দুনিয়া উল্টে যাওয়া সব পরিবর্তন দেখেছে এই প্রজন্মের মানুষেরা। ইন্টারনেটে একটু কম আওয়াজ তুললেও বাস্তব জীবনে বিশাল এক দায়িত্ব পালন করছেন তারা। প্রতি ধাপে যন্ত্র ও প্রযুক্তির ছোঁয়া ছাড়া জীবন কেমন – এই সত্য বর্তমান প্রজন্মকে শেখাচ্ছেন তারা।

বেবি বুমার্সরা পালন করছেন বিশাল এক দায়িত্ব

আজ (১৭ আগস্ট) বেবি বুমার্স অ্যাপ্রিসিয়েশন ডে-তে চলুন একটু ভেবে দেখা যাক আমাদের আগামী প্রজন্মগুলোর ওপর তাদের অবদানের বিষয়ে।

বেবি বুমার্সদের বেশিরভাগই জীবনের পথ চলতে চলতে এখন দাদা-দাদি, নানা-নানি। সারাজীবন বিচিত্ররকম সামাজিক পরিবর্তনের সাক্ষী তারা। একদিকে তাদের যৌবন কেটেছে চিঠি লিখে, ডাকপিয়নের অপেক্ষায় থেকে কিংবা সাদাকালো টেলিভিশনের যুগে। অন্যদিকে আজকের পৃথিবী প্রযুক্তিনির্ভর। স্মার্টফোন, ইন্টারনেট আর সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া তরুণ প্রজন্মের জীবন যেন কল্পনাই করা যায় না।

বেবি বুমার্সরা পালন করছেন বিশাল এক দায়িত্ব

সময় বদলেছে, প্রযুক্তি বদলেছে, কিন্তু সম্পর্কের বন্ধন তো এখনও অটুট। আর সেই বন্ধনেই তৈরি হচ্ছে এক সুন্দর সেতুবন্ধন – যেখানে নাতি-নাতনিরা দাদা-দাদি ও নানা-নানিকে শেখাচ্ছেন স্মার্টফোনের ব্যবহার, আর তাদের শিখছেন জীবনের অমূল্য পাঠ।

>> প্রযুক্তির দুনিয়ার গাইড হচ্ছেন নাতি-নাতনিরা

আজকের প্রজন্মগুলো টাচস্ক্রিন ও ডিজিটাল দুনিয়ার সঙ্গে খুব ছোট বয়স থেকেই পরিচিত। ইউটিউব, গুগল, ফেসবুক, ভিডিও কল – এসব তাদের কাছে খেলনার মতো সহজ। অনেক সময় দাদা-দাদিরাও চান প্রযুক্তির এই সুবিধাগুলো ব্যবহার করতে – হয়তো বিদেশে থাকা ছেলে-মেয়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলবেন, কিংবা অনলাইনে খবর পড়বেন।

বেবি বুমার্সরা পালন করছেন বিশাল এক দায়িত্ব

তখন নাতি-নাতনিরাই হয়ে ওঠে শিক্ষক। তারা ধৈর্য ধরে বোঝায় কিভাবে ফোনে ছবি তোলা যায়, গুগল ম্যাপে রাস্তা খোঁজা যায়, কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে স্টিকার পাঠানো যায়। এই শেখার মুহূর্তগুলো শুধু প্রযুক্তি নয়, একধরনের আনন্দময় পারিবারিক স্মৃতি তৈরি করে।

বেবি বুমার্সরা পালন করছেন বিশাল এক দায়িত্ব

>> জীবনবোধ শেখায় দাদা-দাদি

অন্যদিকে জীবনের বড় পাঠ আসে অভিজ্ঞতা থেকে। সেই জায়গায় বেবি বুমার প্রজন্মের অবদান অসাধারণ। দাদা হয়তো শেখাচ্ছেন ধৈর্যের মূল্য, আর দাদি শোনাচ্ছেন পরিবারের ঐক্য টিকিয়ে রাখার গল্প। তাদের সংগ্রামী জীবনের অভিজ্ঞতা, ন্যায়-অন্যায়ের মূল্যবোধ, স্বল্প দিয়ে সুখে থাকার কৌশল বা সম্পর্ককে ধরে রাখার প্রজ্ঞা – এসবই নাতি-নাতনির কাছে অমূল্য শিক্ষা।

বেবি বুমার্সরা পালন করছেন বিশাল এক দায়িত্ব

হার্ভার্ড টি.এইচ. চান স্কুল অব পাবলিক হেলথ এর গবেষণায়ও দেখা গেছে, দাদা-দাদি ও নানা-নানির সঙ্গে সময় কাটানো শিশুদের মানসিক স্থিতি বাড়ায় এবং পারিবারিক মূল্যবোধকে শক্ত করে।

সমাজবিজ্ঞানীরা বলেন, এ ধরনের প্রজন্মান্তরের সম্পর্ক শুধু পারিবারিক বন্ধন নয়, বরং সামাজিক ঐক্য ও মানবিক মূল্যবোধেরও ভিত্তি। প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করে, কিন্তু অভিজ্ঞতা বাঁচতে শেখায়।

সূত্র: হার্ভার্ড টি. এইচ. চান স্কুল অব পাবলিক হেলথ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ, সায়েন্টিফিক আমেরিকান

এএমপি/এমএস

Read Entire Article