বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কী হবে, জানালেন উমামা

2 days ago 7

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সৃষ্টি হওয়া প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভবিষ্যৎ রাজনীতি বা কার্যক্রম কেমন হবে, তা জানিয়েছেন সংগঠনটির মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাতীয় নাগরিক পার্টির সহায়ক হিসেবে থাকার প্রস্তাব এসেছে বলেও জানান তিনি।

শনিবার (২৯ মার্চ) তার ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে এই কথা জানিয়েছেন তিনি।

পোস্টে উমামা লেখেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি অবশ্যই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হতে হবে। শুধু পছন্দের ব্যক্তিদের ডেকে এনে মিটিং করলেই তা গণতান্ত্রিক হয়ে যায় না। অভ্যুত্থানের সময় এটা ছাত্রদের 'সার্বজনীন' 'নির্দলীয়' 'অরাজনৈতিক' প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কার্যকর ছিল। অভ্যুত্থানের পর ঐক্যবদ্ধতার পরিবর্তে নিজেদের পছন্দের কোরামকে শক্তিশালী করার জন্য এই প্ল্যাটফর্মের জনপ্রিয়তাকে বারংবার ব্যবহার করার চেষ্টা হয়েছে। ফলে ইচ্ছাকৃতভাবে আন্দোলনের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে মতবিরোধ ও অনৈক্য তৈরির প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা হয়েছে।’

সংগঠনে জড়িতের সামলোচনা করে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের নানা সময় ট্যাগ দেওয়া নিয়ে বলেন, অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেখে এসেছি কীভাবে আন্দোলনকারীদের মধ্যে সব থেকে স্বচ্ছ, তরুণ, স্বাধীনচেতা ও গণতন্ত্রমনস্ক ছাত্র-ছাত্রীদের সারা দেশে কোরাম-পাল্টা কোরাম পলিটিকস করে সাইডলাইন করা হয়েছে। অভ্যুত্থানের সাত মাস পরে প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে আখের গোছানো প্রায় শেষ, শুধু বাকি এই সময়ে প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে জেলা, উপজেলা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যুক্ত ছাত্রদের ব্যবহার করা। এই ছাত্রদের দলীয় ম্যান পাওয়ারে পরিণত করতে পারলেই প্ল্যাটফর্ম পুরোটাই পকেটবন্দী করা যাবে।’

‘নবগঠিত রাজনৈতিক দলের একজন নেতৃত্ব বেশ নির্বিকারভাবে উদাহরণ দিয়ে বলেছেন একাত্তরের পর ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি আওয়ামী লীগকে যেভাবে সাপোর্ট দেয় বা ভারতে RSS বিজেপিকে যেভাবে সাপোর্ট দেয়, সেই ফরমেটে নেওয়া যেতে পারে। ইনিয়ে-বিনিয়ে ওই ব্যক্তি আরও বলার চেষ্টা করেন যে আমার এই প্ল্যাটফর্মে আর না থাকাটা ভালো হবে। আর এখন এই প্ল্যাটফর্মে ওনাদের, তেনাদের সম্মতি ছাড়া পাতাও নড়বে না এটাই অলিখিত নিয়ম।’

উমামা আরও লেখেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান তো কারও বাপের সম্পত্তি না, বহু মানুষ এই প্ল্যাটফর্মে এসে জড়ো হয়েছে, এখনো স্বপ্ন দেখতে চায়, পাবলিক, প্রাইভেট, রিকশাওয়ালা, শ্রমিক, মাদ্রাসার ছাত্র, গৃহিণী সবার হক আছে এই প্ল্যাটফর্মে। সবার অধিকারের কথা এই প্ল্যাটফর্ম বলার এখতিয়ার রাখে। কিন্তু ছাত্রদের মধ্যে সবাইকে অস্বীকার করে রাজনৈতিক সংগঠনের হায়ারার্কির পছন্দের ভিত্তিতে যদি নেতৃত্ব নির্বাচন হয়, তাহলে প্ল্যাটফর্মের সামান্যতম নিরপেক্ষতার সুযোগ থাকে না।‘

প্ল্যাটফর্মের ভবিষ্যৎ নিয়ে উমামা ফাতেমা বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যত দিন আছে, এই প্ল্যাটফর্ম রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়ে যাওয়া যেকোনো ছাত্র আন্দোলনের জন্য বড় ঝুঁকি। তাই আশা করি অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান রেখে ছাত্রদের সব অংশীদারদের সম্মতি (পাবলিক, প্রাইভেট, মহানগর, কলেজ, মাদ্রাসা) ভিত্তিতেই এই প্ল্যাটফর্মের ভবিষ্যৎ আমরা নির্ধারণ করতে পারব। এই লক্ষ্যে প্ল্যাটফর্ম রিফরমেশনের জন্য খুব শিগগিরই সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে বসে আলোচনা হবে।’

Read Entire Article